إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ (ال عمران : 19)
“নিশ্চতভাবেই আল্লাহর মনোনীত দ্বীন ‘ইসলাম’।” (আলে ইমরান, ১৯)
وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ (ال عمران : 85)
“যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা চায় তার সেই জীবন ব্যবস্থা কখনো গ্রহণ করা হবে না।” (আলে ইমরান, ৮৫)
وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا (المائدة : 3)
“আমি তোমাদের জীবন বিধান হিসেবে ইসলামকে মনোনীত করেছি।” (আল মায়েদা, ৩)
فَمَنْ يُرِدِ اللَّهُ أَنْ يَهْدِيَهُ يَشْرَحْ صَدْرَهُ لِلْإِسْلَامِ ( الانعام : 125)
“আল্লাহ যাকে হিদায়াত দান করতে চান তার হৃদয় মনকে ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দেন।” (আল আনআম, ১২৫)
قُلْ إِنِّي أُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ أَوَّلَ مَنْ أَسْلَمَ (الانعام : 14)
“হে নবী! বলে দাও, আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যাতে আমি সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী হই।” (আল আনআম, ১৪)
فَإِنْ أَسْلَمُوا فَقَدِ اهْتَدَوْا (ال عمران : 20)
“এরপর তারা যদি ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে হিদায়াত প্রাপ্ত হলো।” (আলে ইমরান, ২০)
يَحْكُمُ بِهَا النَّبِيُّونَ الَّذِينَ أَسْلَمُوا (المائدة :44)
“সমস্ত নবী---যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন তাওরাত অনুসারে ফায়সালা করতেন।” (আল মায়েদা, ৪৪)
এসব আয়াতে এবং এ ধরনের আরো বহু আয়াতে ইসলাম গ্রহণের অর্থ কি ঈমানবিহীন আনুগত্য করা? একইভাবে ‘মুসলিম’ শব্দটি যে অর্থে বারবার ব্যবহার করা হয়েছে তার জন্য নমুনা হিসেবে নিম্ন বর্ণিত আয়াতসমূহ দেখুনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ (ال عمران :102)
“হে ঈমান গ্রহণকারীগণ! আল্লাহকে ভয় করার মত ভয় করো। আর মুসলিম হওয়ার আগেই যেন তোমাদের মৃত্যু না আসে।” (আলে ইমরান, ১০২)
“তিনি এর পূর্বেও তোমাদের নামকরণ করেছিলেন মুসলিম তাছাড়া এ কিতাবেও।” (আল হাজ্ব, ৭৮)
مَا كَانَ إِبْرَاهِيمُ يَهُودِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلَكِنْ كَانَ حَنِيفًا مُسْلِمًا (ال عمران : 67)
“ইবরাহীম ইহুদী বা খৃস্টান কোনটাই ছিলেন না। তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিম।” (আলে ইমরান, ৬৭)
رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِنْ ذُرِّيَّتِنَا أُمَّةً مُسْلِمَةً لَكَ (البقرة : 128)
“(কা’বা ঘর নির্মাণের সময় হযরত ইবরাহীম ও ইসমাঈলের দোয়া) হে আমাদের রব, আমাদের দু’জনকেই তোমার অনুগত বানাও এবং আমাদের বংশ থেকে এমন একটি উম্মত সৃষ্টি করো যারা তোমার অনুগত হবে।” (আল বাকারা, ১২৮)
يَا بَنِيَّ إِنَّ اللَّهَ اصْطَفَى لَكُمُ الدِّينَ فَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ (البقرة : 132)
[নিজের সন্তানদেরকে হযরত ইয়াকূবের (আ) অসীয়ত] “হে আমার সন্তানেরা, আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্য এ জীবন বিধানকেই মনোনীত করেছেন। অতএব, মুসলিম হওয়ার আগে যেন তোমাদের মৃত্যু না আসে।” (আল বাকারা, ১৩২)
এসব আয়াত পাঠ করে এমন ধারণা কে করতে পারে যে, এতে উল্লেখিত মুসলিম শব্দের দ্বারা এমন লোককে বুঝানো হয়েছে যে বাহ্যত ইসলাম গ্রহণ করলেও আন্তরিকভাবে তা মানে না? সুতরাং কুরআনের পরিভাষা অনুসারে ইসলাম অর্থ ঈমানহীন আনুগত্য এবং কুরআনের ভাষায় কেবল বাহ্যিকভাবে ইসলাম গ্রহণকারীকেই মুসলিম বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে এরূপ দাবী করাও চরম ভুল। অনুরূপ এ দাবী করাও ভুল যে, কুরআন মজীদে উল্লেখিত ঈমান ও মু’মিন শব্দ দু’টি অবশ্যই সরল মনে মেনে নেয়া অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব শব্দ নিঃসন্দেহে এ অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। তবে এমন অনেক স্থানও আছে যেখানে এ শব্দ ঈমানের বাহ্যিক স্বীকৃতি বুঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। যারা মৌখিক স্বীকারোক্তির মাধ্যমে মুসলমানের দলে শামিল হয়েছে। يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا বলে তাদেরকেই সম্বোধন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা সত্যিকার মু’মিন, না দুর্বল ঈমানের অধিকারী না মুনাফিক তা বিচার করা হয়নি। এর বহুসংখ্যক উদাহরণের মধ্য থেকে মাত্র কয়েকটির জন্য দেখুন, আলে ইমরান, আয়াত, ১৫৬; আন নিসা, ১৩৬; আল মায়েদা, ৫৪; আল আনফাল, ২০ থেকে ২৭; আত তাওবা, ৩৮; আল হাদীদ, ২৮; আস-সফ, ২০।