مَّنَّاعٍۢ لِّلْخَيْرِ مُعْتَدٍۢ مُّرِيبٍ
কল্যাণের প্রতিবন্ধক ৩০ ও সীমালংঘনকারী ছিল, ৩১ সন্দেহ সংশয়ে নিপতিত ছিল ৩২
৩০
আরবী ভাষায় خير শব্দটি সম্পদ অর্থেও ব্যবহৃত হয় এবং কল্যাণ অর্থেও ব্যবহৃত হয়। প্রথম অর্থটি গ্রহণ করলে আয়াতের অর্থ হবে, তারা নিজেদের অর্থ-সম্পদ থেকে বান্দা ও আল্লাহ কারো হকই আদায় করতো না। দ্বিতীয় অর্থ গ্রহণ করলে আয়াতের অর্থ হবে, তারা কল্যাণের পথ থেকে নিজেরাই যে কেবল বিরত থাকতো তাই নয় বরং অন্যদেরকেও তা থেকে বিরত রাখতো। তারা পৃথিবীর কল্যাণের পথে বাঁধা হয়েছিলো। কোনভাবেই যেন কল্যাণ ও সুকৃতি বিস্তার লাভ করতে না পারে এ উদ্দেশ্যেই তারা তাদের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করেছিলো।
৩১
অর্থাৎ নিজের প্রতিটি কাজে নৈতিকতার সীমালংঘনকারী। নিজের স্বার্থ, উদ্দেশ্যাবলী ও আশা-আকাংখ্যার জন্য যে, কোন কাজ করতে সে প্রস্তুত থাকতো। হারাম, পন্থায় অর্থ-সম্পদ উপার্জন করতো এবং হারাম পথেই তা ব্যয় করতো। মানুষের অধিকারে হস্তক্ষেপ করতো। না তার মুখ কোন বাধ্য-বাধকতায় সীমাবদ্ধ ছিল, না তার হাত কোন প্রকার জুলুম ও বাড়াবাড়ি থেকে বিরত থাকতো। কল্যাণের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাকেই সে যথেষ্ট মনে করতো না, বরং আরো অগ্রসর হয়ে সততা ও কল্যাণের পথের অনুসারীদেরকে সে উত্যক্ত করতো এবং কল্যাণের জন্য যারা কাজ করতো তাদের ওপর নির্যাতন চালাতো।
৩২
মূল আয়াতে مُرِيبٍ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এ শব্দটির দু’টি অর্থ। এক, সন্দেহ পোষণকারী। দুই, সন্দেহের মধ্যে নিক্ষেপকারী। এখানে দু’টি অর্থই গ্রহণীয়। অর্থাৎ নিজেও সন্দেহের মধ্যে পতিত ছিলো এবং অন্যদের মনেও সন্দেহ সৃষ্টি করতো। তার কাছে আল্লাহ, আখেরাত, ফেরেশতা, অহী এক কথায় ইসলামের সব সত্যিই ছিল সন্দেহজনক। নবী-রসূলের পক্ষ থেকে ন্যায় ও সত্যের যে কথাই পেশ করা হতো তার ধারণায় তা বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। তাই সে আল্লাহর অন্য বান্দাদের মধ্যেও এ রোগ ছড়িয়ে বেড়াতে। সে যার সাথেই মেলামেশার সুযোগ পেতো তার অন্তরেই কোন না কোন সন্দেহ এবং কোন না কোন দ্বিধা-সংশয় সৃষ্টি করে দিতো।