একটি হচ্ছে, মানব ইতিহাসে আল্লাহর প্রতিদানের বিধান সবসময় কার্যকর আছে। এ বিধানে নেককারদের জন্য পুরস্কার এবং জালেমদের জন্য শাস্তির দৃষ্টান্ত সবসময় কার্যকর দেখা যায়। এটি এ বিষয়ের স্পষ্ট প্রমাণ যে, এ পার্থিব জীবনেও মানুষের সাথে তার স্রষ্টার আচরণ কেবল প্রাকৃতিক বিধান (Physical Law) অনুসারে হয় না, বরং তার সাথে নৈতিক বিধানও (Moral Law) সক্রিয়। তাছাড়া এ গোটা বিশ্ব-জাহান সাম্রাজ্যের স্বভাবই যখন এই যে, যে সৃষ্টিকে বস্তুগত দেহে অবস্থান করে নৈতিক কাজ-কর্মের সুযোগ দেয়া হয়েছে তার সাথে পশু ও উদ্ভিদরাজির মত কেবল প্রাকৃতিক বিধান অনুসারে আচরণ করা হবে না, বরং তার নৈতিক কাজ-কর্মের ওপর নৈতিক প্রতিফলের বিধানও কার্যকর করা হবে তখন এ দ্বারা স্পষ্টতই বুঝা যায় যে, এ সাম্রাজ্যে এমন একটা সময় অবশ্যই আসতে হবে যখন এ প্রাকৃতিক জগতে মানুষের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নিরেট নৈতিক আইনানুসারে তার নৈতিক কাজ-কর্মের ফলাফল পূর্ণরূপে প্রকাশ পাবে। কারণ এ বস্তুজগতে তা পূর্ণরূপে প্রকাশ পেতে পারে না।
এ ঐতিহাসিক ইঙ্গিতসমূহের মাধ্যমে দ্বিতীয় যে জিনিসটি মানুষের মনে বদ্ধমূল করানো হয়েছে তা হচ্ছে, যেসব জাতিই আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের কথা মানেনি এবং নিজেদের জীবনের গোটা আচরণ তাওহীদ, রিসালাত ও আখেরাত অস্বীকৃতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলেছে শেষ পর্যন্ত তারা ধ্বংসের উপযুক্ত হয়ে গিয়েছে। নবী-রসূলের মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ থেকে যে নৈতিক বিধান দেয়া হয়েছে এবং সে বিধানানুসারে আখেরাতে মানুষের কাজ-কর্মের যে জবাবদিহি করতে হবে তা যে বাস্তব ও সত্য ইতিহাসের এ নিরবচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতাই তার সাক্ষী। কারণ যে জাতিই এ বিধানে তোয়াক্কা না করে নিজেকে দায়িত্ব ও জবাবদিহি মুক্ত মনে করে এ পৃথিবীতে তার করণীয় নির্ধারণ করেছে পরিণামে সে জাতি সরাসরি ধ্বংসের পথের দিকে অগ্রসর হয়েছে।