أَمْ تَأْمُرُهُمْ أَحْلَـٰمُهُم بِهَـٰذَآ ۚ أَمْ هُمْ قَوْمٌۭ طَاغُونَ
তাদের বিবেক-বুদ্ধি কি তাদেরকে এসব কথা বলতে প্ররোচিত করে, না কি প্রকৃতপক্ষে তারা শত্রুতায় সীমালংঘনকারী লোক? ২৫
২৫
এ দু’টি বাক্যে বিরোধীদের সমস্ত অপপ্রচার খণ্ডন করে দিয়ে তাদের মুখোশ সম্পূর্ণরূপে খুলে দেয়া হয়েছে। যুক্তির সারকথা হলো, কুরাইশদের এসব নেতা এ প্রবীণ ব্যক্তি বড় বড় জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান সেজে বসে আছে। কিন্তু তাদের জ্ঞানবুদ্ধি কি বলে, যে ব্যক্তি কবি নয় তাঁকে কবি বলো, গোটা জাতির লোক যাকে একজন জ্ঞানী বলে জানে তাঁকে পাগল বলো এবং গণনা বিদ্যার সাথে যার দূরতম সম্পর্কও নেই তাঁকে অযথা গণক বলে আখ্যায়িত করো। এরপরও যদি তারা জ্ঞান ও যুক্তির ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নিতো তাহলে যে কোন একটি কথাই বলতো। অনেকগুলো পরস্পর বিরোধী উপাধি তো কাউকে একসাথে দেয়া যায় না। এক ব্যক্তি কবি, পাগল ও গণক একই সাথে কিভাবে হতে পারে? সে যদি পাগল হয়ে থাকে তাহলে গণক বা কবি হতে পারে না। গণক হলে কবি হতে পারে না এবং কবি হলে গণক হতে পারে না। কেননা, কবিতার ভাষা ও আলোচ্য বিষয় যা গণক বা জোতিষীদের ভাষা ও বিষয়বস্তু তা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। একই কথাকে যুগপৎ কাব্য ও গণকদের গণনা বলে আখ্যায়িত করা এমন কোন ব্যক্তির কাজ হতে পারে না, যে কাব্য ও গণনা বিদ্যার পার্থক্য সম্পর্কে অবহিত। অতএব, এটা অত্যন্ত পরিষ্কার কথা যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে পরস্পর বিরোধী কথা ও মন্তব্য জ্ঞান-বুদ্ধির ভিত্তিতে নয়, বরং সরাসরি জিদ ও হঠকারীতার ভিত্তিতে করা হচ্ছে। জাতির এসব বড় বড় নেতা শুধু শত্রুতার আতিশয্যে অন্ধ হয়ে এমন সব ভিত্তিহীন অপবাদ আরোপ করছে যা কোন সুস্থ ও স্থির মস্তিষ্কের মানুষ গ্রহণযোগ্য মনে করতে পারে না। (আরো ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা আল আ’রাফ, টীকা ১০৪; ইউনুস, টীকা ৩; বনী ইসরাইল, টীকা ৫৩ ৫৪; আশ শু’আরা, টীকা ১৩০, ১৩১, ১৪০, ১৪২, ১৪৩ ১৪৪, )।