আল ক্বামার

৫৫ আয়াত

بِسْمِ ٱللّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
৩১ ) আমি তাদের ওপর একটি মাত্র বিকট শব্দ পাঠালাম এবং তারা খোঁয়াড়ের মালিকের শুষ্ক ও পদদলিত শস্যের মত হয়ে গেল। ২১
إِنَّآ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ صَيْحَةً وَٰحِدَةً فَكَانُوا۟ كَهَشِيمِ ٱلْمُحْتَظِرِ ٣١
৩২ ) আমি এ কুরআনকে উপদেশ গ্রহণের সহজ উৎস বানিয়ে দিয়েছি। এখন উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا ٱلْقُرْءَانَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ ٣٢
৩৩ ) লূতের কওম সাবধান বাণীসমূহ অস্বীকার করলো।
كَذَّبَتْ قَوْمُ لُوطٍۭ بِٱلنُّذُرِ ٣٣
৩৪ ) আমি তাদের ওপর পাথর বর্ষণকারী বাতাস পাঠালাম।
إِنَّآ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ حَاصِبًا إِلَّآ ءَالَ لُوطٍ نَّجَّيْنَٰهُم بِسَحَرٍ ٣٤
৩৫ ) শুধু লূতের পরিবারের লোকেরা তা থেকে রক্ষা পেল। আমি নিজের অনুগ্রহে তাদেরকে রাতের শেষ প্রহরে বাঁচিয়ে বের করে দিলাম। যারা কৃতজ্ঞ আমি তাদের সবাইকে এভাবে প্রতিদান দিয়ে থাকি।
نِّعْمَةً مِّنْ عِندِنَا كَذَٰلِكَ نَجْزِى مَن شَكَرَ ٣٥
৩৬ ) লূত তার কওমের লোকদেরকে আমার শাস্তি সম্পর্কে সাবধান করেছিল। কিন্তু তারা সবগুলো সাবধানবাণী সম্পর্কে সন্দেহ পোষন করলো এবং কথাচ্ছলেই উড়িয়ে দিল।
وَلَقَدْ أَنذَرَهُم بَطْشَتَنَا فَتَمَارَوْا۟ بِٱلنُّذُرِ ٣٦
৩৭ ) অতঃপর তারা তাকে তার মেহমানদের হিফাজত করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করলো। শেষ পর্যন্ত আমি তাদের চোখ অন্ধ করে দিলাম। এখন তোমরা আমার আযাব ও সাবধানবাণীর স্বাদ আস্বাদন করো। ২২
وَلَقَدْ رَٰوَدُوهُ عَن ضَيْفِهِۦ فَطَمَسْنَآ أَعْيُنَهُمْ فَذُوقُوا۟ عَذَابِى وَنُذُرِ ٣٧
৩৮ ) খুব ভোরেই একটি অপ্রতিরোধ্য আযাব তাদের ওপর আপতিত হলো।
وَلَقَدْ صَبَّحَهُم بُكْرَةً عَذَابٌ مُّسْتَقِرٌّ ٣٨
৩৯ ) এখন আমার আযাব ও সাবধানবাণীসমূহের স্বাদ আস্বাদন করো।
فَذُوقُوا۟ عَذَابِى وَنُذُرِ ٣٩
৪০ ) আমি এ কুরআনকে উপদেশ গ্রহণের সহজ উৎস বানিয়ে দিয়েছি। উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا ٱلْقُرْءَانَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ ٤٠
২১.
যারা গবাদী পশু পালে তারা পশুর খোঁয়াড়ের সংরক্ষণ ও হিফাজতের জন্য কাঠ ও গাছের ডাল পালা দিয়ে বেড়া তৈরী করে দেয়। এ বেড়ার কাঠ ও গাছ-গাছালীর ডালপালা আস্তে আস্তে শুকিয়ে ঝড়ে পড়ে এবং পশুদের আসা যাওয়ায় পদদলিত হয়ে করাতের গুড়াঁর মত হয়ে যায়। সামূদ জাতির দলিত-মথিত লাশসমূহকে করাতের ঐ গূঁড়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে।
২২.
এ ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা সূরা হূদ (আয়াত ৭৭ থেকে ৮৩) ও সূরা হিজরে (আয়াত ৬১ থেকে ৭৪) পূর্বেই দেয়া হয়েছে। ঘটনার সার সংক্ষেপ হলো, আল্লাহ‌ তা’আলা এ জাতির ওপর আযাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে কয়েকজন ফেরেশতাকে অত্যন্ত সুদর্শন বালকের আকৃতিতে হযরত লূতের বাড়ীতে মেহমান হিসেবে পাঠিয়ে দিলেন। কওমের লোকজন তাঁর কাছে এত সুশ্রী মেহমান আসতে দেখে তাঁর বাড়ীতে গিয়ে চড়াও হলো এবং তাঁর কাছে দাবী করলো যে, তিনি যেন তাঁর মেহমানের সাথে কুকর্ম করার জন্য তাদের হাতে তুলে দেন। হযরত লূত এ জঘন্য আচরণ থেকে বিরত থাকার জন্য তাদের কাছে অত্যন্ত কাকুতি-মিনতি ও অনুরোধ-উপরোধ করলেন। কিন্তু তারা তা মানলো না এবং ঘরে প্রবেশ করে জোর পূর্বক মেহমানদের বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলো। এ পর্যায়ে হঠাৎ তারা অন্ধ হয়ে গেল। এ সময় ফেরেশতারা হযরত লূতকে বললেন, তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকজন ভোর হওয়ার পূর্বেই যেন এ জনপদের বাইরে চলে যান। তারা জনপদের বাইরে চলে যাওয়া মাত্র ঐ জাতির ওপর ভয়ানক আযাব নেমে আসে। বাইবেলেও ঘটনাটি এভাবেই বর্ণিত হয়েছে। বাইবেলের ভাষা হচ্ছেঃ তখন তাহারা লোটের উপরে ভারী চড়াও হইয়া কবাট ভাংগিতে গেল। তখন সেই দুই ব্যক্তি হস্ত বাড়াইয়া লোটকে গৃহের মধ্যে আপনাদের নিকটে টানিয়া লইয়া কবাট বন্ধ করিলেন; এবং গৃহদ্বারের নিকটবর্তী ক্ষুদ্র ও মহান সকল লোককে অন্ধতায় আহত করিলেন। তাহাতে তাহারা দ্বার খুঁজিতে খুঁজিতে পরিশ্রান্ত হইল। (আদি পুস্তক ১৯: ৯-১১)।
অনুবাদ: