أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ نُهُوا۟ عَنِ ٱلنَّجْوَىٰ ثُمَّ يَعُودُونَ لِمَا نُهُوا۟ عَنْهُ وَيَتَنَـٰجَوْنَ بِٱلْإِثْمِ وَٱلْعُدْوَٰنِ وَمَعْصِيَتِ ٱلرَّسُولِ وَإِذَا جَآءُوكَ حَيَّوْكَ بِمَا لَمْ يُحَيِّكَ بِهِ ٱللَّهُ وَيَقُولُونَ فِىٓ أَنفُسِهِمْ لَوْلَا يُعَذِّبُنَا ٱللَّهُ بِمَا نَقُولُ ۚ حَسْبُهُمْ جَهَنَّمُ يَصْلَوْنَهَا ۖ فَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যাদেরকে কানাঘুষা করতে নিষেধ করা হয়েছিল, তথাপি তারা সে নিষিদ্ধ কাজ করে চলেছে? ২১ তারা লুকিয়ে লুকিয়ে পরস্পরে গোনাহ, বাড়াবাড়ি এবং রসূলের অবাধ্যতার কথাবার্তা বলাবলি করে, আর যখন তোমার কাছে আসে, তখন তোমাকে এমনভাবে সালাম করে যেভাবে আল্লাহ তোমাকে ছালাম করেনি। ২২ আর মনে মনে বলে যে, আমাদের এসব কথাবার্তার জন্য আল্লাহ আমাদেরকে শাস্তি দেয় না কেন? ২৩ তাদের জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট। তারা তাতেই দগ্ধ হবে। তাদের পরিণাম অত্যন্ত শোচনীয়।
২১
এ বক্তব্য থেকে বুঝা যায় যে, এ আয়াত নাযিল হবার আগে রসূল ﷺ তাদেরকে এ কাজ করতে নিষেধ করেছিলেন। তা সত্ত্বেও যখন তারা এ থেকে নিবৃত্ত হয়নি, তখন সরাসরি আল্লাহর কাছ থেকে এ ভৎর্সনাপূর্ণ বাণী নাযিল হয়।
২২
ইহুদী ও মুনাফিক---উভয় গোষ্ঠী এ ধরনের আচরণে লিপ্ত ছিল। একাধিক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, কিছু সংখ্যক ইহুদী রসূল ﷺ এর দরবারে উপনীত হয়ে বললোঃ اَلسَّامُ عَلَيْكَ يَا اَبَا الْقَاسِمُ অর্থাৎ “আসসামু আলাইকা ইয়া আবাল কাসেম” কথাটা এমনভাবে উচ্চারণ করলো যে, শ্রোতা মনে করতে পারে যে, তারা তাঁকে সালাম দিয়েছে। অথচ আসলে তারা আসসামু আলাইকা অর্থাৎ তোমার মৃত্যু হোক। রসূল ﷺ জবাবে বললেনঃ وعليكم অর্থাৎ “তোমাদের ওপরও।” হযরত আয়েশা (রা.) আত্মসম্বরণ করতে পারলেন না। তিনি বললেন, “তোমাদের মৃত্যু হোক এবং আল্লাহর গযব ও অভিশাপ পড়ুক।” রসূল ﷺ বললেনঃ হে আয়েশা, আল্লাহ তা’আলা কটু বাক্য পসন্দ করেন না। হযরত আয়েশা (রা.) বললেনঃ হে রসূল, ওরা কি বলেছে তা কি আপনি শোনেননি? রসূল ﷺ বললেনঃ আর আমি কি জবাব দিয়েছি তা তুমি শোনোনি? আমি তাদেরকে বলে দিয়েছে “তোমাদের ওপরও।” (বুখারী, মুসলিম, ইবনে জারীর, ইবনে আবী হাতেম) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেন যে, মুনাফিক ও ইহুদী উভয় গোষ্ঠী এভাবেই সালাম দিতো। (ইবনে জারীর)
২৩
অর্থাৎ তারা এ জিনিসটাকে রসূল ﷺ এর রসূল হওয়ার প্রমাণ মনে করতো। তারা ভাবতো যে, তিনি যদি রসূল হতেন, তাহলে যে মুহূর্তে আমরা “আসসালামু আলাইকা”র পরিবর্তে “আসসামু আলাইকা” বলেছি, সে মুহূর্তে আমাদের ওপর আযাব এসে যেতো, আমরা দিনরাত এরূপ আচরণ করা সত্ত্বেও যখন কোন আযাব আসেনি, তখন ইনি রসূল নন।