قُلْ مَنْ حَرَّمَ زِينَةَ ٱللَّهِ ٱلَّتِىٓ أَخْرَجَ لِعِبَادِهِۦ وَٱلطَّيِّبَـٰتِ مِنَ ٱلرِّزْقِ ۚ قُلْ هِىَ لِلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا خَالِصَةًۭ يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ ۗ كَذَٰلِكَ نُفَصِّلُ ٱلْـَٔايَـٰتِ لِقَوْمٍۢ يَعْلَمُونَ
হে মুহাম্মাদ! তাদেরকে বলে দাও, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য যেসব সৌন্দর্য সামগ্রী সৃষ্টি করেছেন, সেগুলো কে হারাম করেছে? আর আল্লাহর দেয়া পবিত্র জিনিসগুলো কে নিষিদ্ধ করেছে? ২২ বলো, দুনিয়ার জীবনেও এ সমস্ত জিনিস ঈমানদারদের জন্য, আর কিয়ামতের দিনে এগুলো তো একান্তভাবে তাদেরই জন্য হবে। ২৩ এভাবে যারা জ্ঞানের অধিকারী তাদের জন্য আমার কথাগুলো আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বর্ণনা করে থাকি।
২২
এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ তো তাঁর দুনিয়ার সমস্ত শোভা-সৌন্দর্য এবং সমস্ত পাক-পবিত্র জিনিস তাঁর বান্দাদের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। কাজেই এগুলো বান্দাদের জন্য হারাম করে দেয়া কখনো তার উদ্দেশ্য হতে পারে না। এখন যদি কোন ধর্ম বা নৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থা এগুলোকেহারাম, ঘৃণ্য অথবা আত্মিক উন্নতির প্রতিবন্ধক গণ্য করে তাহলে তার এ কাজটিই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, সেটি আল্লাহর পক্ষ থেকে আসেনি। বাতিল ধর্মমতগুলোর বিরুদ্ধে কুরআন যেসব যুক্তি-প্রমাণ পেশ করেছে এটি তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি। বস্তুত কুরআনের যুক্তি উপস্থাপন পদ্ধতি অনুধাবন করার জন্য এ যুক্তিটি অনুধাবন করা একান্ত অপরিহার্য।
২৩
অর্থাৎ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর সৃষ্ট সমস্ত জিনিস দুনিয়ার জীবনেও ঈমানদারদের জন্যই। কারণ তারাই আল্লাহর বিশ্বস্ত প্রজা। আর একমাত্র নিমকহালাল, বিশ্বস্ত ও অনুগত লোকেরাই অনুগ্রহলাভের অধিকারী হতে পারে। কিন্তু দুনিয়ার বর্তমান ব্যবস্থাপনা যেহেতু পরীক্ষা ও অবকাশদানের নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত তাই এখানে অধিকাংশ সময় আল্লাহর অনুগ্রহগুলো নিমকহারাম ও অকৃতজ্ঞদের মধ্যেও বন্টিত হতে থাকে। আর অনেক সময় বিশ্বস্ত ও নিমক হালালদের তুলনায় তাদের ওপরই বেশী অনুগ্রহ বর্ষণ করা হয়ে থাকে। তবে আখেরাত (যেখানকার সমস্ত ব্যবস্থাপনা হক, সত্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হবে) জীবনের আরাম আয়েশের সমস্ত উপকরণ এবং সমস্ত পবিত্র খাদ্য ও পানীয় একমাত্র অনুগত, কৃতজ্ঞ ও নিমকহালাল বান্দাদের জন্যই নির্ধারিত থাকবে। যেসব নিমকহারাম বান্দা তাদের রবের দেয়া খাদ্য-পানীয়ে জীবন ধারণ করার পরও তাঁরই বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঝাণ্ডা উড়িয়েছে তারা এর থেকে কোন অংশই পাবে না।