إِنَّمَا ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ ٱللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ ءَايَـٰتُهُۥ زَادَتْهُمْ إِيمَـٰنًۭا وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
সাচ্চা ঈমানদার তো তারাই, আল্লাহকে স্মরণ করা হলে যাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে। আর আল্লাহর আয়াত যখন তাদের সামনে পড়া হয়, তাদের ঈমান বেড়ে যায় ২ এবং তারা নিজেদের রবের ওপর ভরসা করে।
২
অর্থাৎ যখনই মানুষের সামনে আল্লাহর কোন হুকুম আসে এবং সে তার সত্যতা মেনে নিয়ে আনুগত্যের শির নত করে দেয়, তখনই তার ঈমান বেড়ে যায়। এ ধরনের প্রত্যেকটি অবস্থায় এমনটিই হয়ে থাকে। যখনই আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রসূলের হেদায়াতের মধ্যে মানুষ এমন কোন জিনিস দেখে, যা তার ইচ্ছা, আশা-আকাংখা, চিন্তা-ভাবনা মতবাদ, পরিচিত আচার-আচরণ, স্বার্থ, আরাম-আয়েশ, ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব বিরোধী হয় এবং সে তা মেনে নিয়ে আল্লাহ ও রসূলের বিধান পরিবর্তন করার পরিবর্তে নিজেকে পরিবর্তিত করে ফেলে এবং তা গ্রহণ করতে গিয়ে কষ্ট স্বীকার করে নেয়, তখন মানুষের ঈমান তরতাজা ও পরিপুষ্ট হয়। পক্ষান্তরে, এমনটি করতে অস্বীকৃতি জানালে মানুষের ঈমানের প্রাণ শক্তি নিস্তেজ হয়ে যেতে থাকে। কাজেই জানা গেলো, ঈমান কোন অনড়, নিশ্চল ও স্থির জিনিসের নাম নয়। এটা শুধুমাত্র একবার মানা ও না মানার ব্যাপার নয়। একবার না মানলে শুধুমাত্র একবারই না মানা হলো এবং একবার মেনে নিলে কেবলমাত্র একবারই মেনে নেয়া হলো এমন নয়। বরং মানা ও না মানা উভয়ের মধ্যে হ্রাস-বৃদ্ধি রয়েছে। প্রত্যেকটি অস্বীকৃতির মাত্রা কমতেও পারে, বাড়তেও পারে। আবার এমনিভাবে প্রত্যেকটি স্বীকৃতি ও মেনে নেয়ার মাত্রাও বাড়তে কমতে পারে। তবে ফিকাহর বিধানের দিক দিয়ে তামাদ্দুনিক ব্যবস্থায় অধিকার ও মর্যাদা নির্দিষ্ট করার সময় মানা ও না মানার ব্যাপাটির একবারই গণ্য করা হয়। ইসলামী সমাজে সকল স্বীকৃতি দানকারীর (মু’মিন) আইনগত অধিকার ও মর্যাদা সমান। তাদের মধ্যে মানার (ঈমান) ব্যাপারে বহুতর পার্থক্য থাকতে পারে। তাতে কিছু আসে যায় না। আবার সকল অস্বীকৃতিদানকারী একই পর্যায়ের যিম্মী বা হরবী (যুদ্ধমান) অথবা চুক্তিবদ্ধ ও আশ্রিত গণ্য হয়, তাদের মধ্যে কুফরীর ব্যাপারে যতই পার্থক্য থাক না কেন।