وَأَلَّفَ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ ۚ لَوْ أَنفَقْتَ مَا فِى ٱلْأَرْضِ جَمِيعًۭا مَّآ أَلَّفْتَ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ أَلَّفَ بَيْنَهُمْ ۚ إِنَّهُۥ عَزِيزٌ حَكِيمٌۭ
এবং মুমিনদের অন্তর পরস্পরের সাথে জুড়ে দিয়েছেন। তুমি সারা দুনিয়ার সমস্ত সম্পদ ব্যয় করলেও এদের অন্তর জোড়া দিতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের অন্তর জুড়ে দিয়েছেন। ৪৬ অবশ্যি তিনি বড়ই পরাক্রমশালী ও জ্ঞানী।
৪৬
আরববাসীদের মধ্য থেকে যারা ঈমান এনেছিলেন তাদের মধ্যে যে ভ্রাতৃত্ব, স্নেহ, প্রীতি, ভালবাসা সৃষ্টি করে মহান আল্লাহ তাদেরকে একটি শক্তিশালী দলে পরিণত করেছিলেন, এখানে সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। অথচ এ দলের ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন গোত্র থেকে বের হয়ে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে শত শত বছর থেকে শত্রুতা চলে আসছিল। বিশেষ করে আল্লাহর এ মেহেরবানী তো আওস ও খাযরাজের ব্যাপারে ছিল সবচেয়ে বেশী সুস্পষ্ট। এ গোত্র দু’টি মাত্র দু'বছর আগেও পরস্পরের রক্তের পিয়াসী ছিল। ইতিহাসখ্যাত বুআস যুদ্ধ শেষ হয়েছিল তখনো খুব বেশী দিন হয়নি। এ যুদ্ধে আওস খাযরাজকে এবং খাযরাজ আওসকে যেন দুনিয়ার বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেবার জন্য মরণপণ করেছিল। এ ধরনের মারাত্মক পর্যায়ের শত্রুতাকে মাত্র দু’তিন বছরের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বে ও ভ্রাতৃত্বে পরিণত করা এবং এসব পরস্পর বিরোধী অংশগুলোকে একত্র করে এমন একটি সীসাঢালা প্রাচীরে পরিণত করা, যেমন নবী (সা.) এর যুগের ইসলামী দলটি-নিঃসন্দেহে সাধারণ মানবীয় শক্তির অসাধ্য ব্যাপার ছিল। অন্যদিকে পার্থিব উপকরণাদির সাহায্যে এত বড় মহান কার্য সম্পাদন সম্ভবপর ছিল না। কাজেই মহান আল্লাহ বলেন, আমার সাহায্য ও সমর্থনের এ বিরাট সুফল যখন তোমরা লাভ করতে পেরেছো, তখন আগামীতেও তোমাদের দৃষ্টি পার্থিব কার্যকরণের ওপর নয় বরং আল্লাহর সমর্থনের ওপর নিবদ্ধ হওয়া উচিত। কারণ সবকিছুর সফলতা একমাত্র তাঁর মাধ্যমেই সম্ভব।