আয়াত
২১ ) সেখানে তার হুকুম মেনে চলা হয়, ১৬ তিনি আস্থাভাজন। ১৭
مُّطَاعٍ ثَمَّ أَمِينٍ ٢١
২২ ) আর (হে মক্কাবাসীরা!) তোমাদের সাথী ১৮ পাগল নয়।
وَمَا صَاحِبُكُم بِمَجْنُونٍ ٢٢
২৩ ) সেই বাণীবাহককে দেখেছে উজ্জ্বল দিগন্তে। ১৯
وَلَقَدْ رَءَاهُ بِٱلْأُفُقِ ٱلْمُبِينِ ٢٣
২৪ ) আর সে গায়েবের (এই জ্ঞান লোকদের কাছে পৌঁছানেরা) ব্যাপারে কৃপণ নয়। ২০
وَمَا هُوَ عَلَى ٱلْغَيْبِ بِضَنِينٍ ٢٤
২৫ ) এটা কোন অভিশপ্ত শয়তানের বাক্য নয়। ২১
وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَيْطَٰنٍ رَّجِيمٍ ٢٥
২৬ ) কাজেই তোমরা কোথায় চলে যাচ্ছো?
فَأَيْنَ تَذْهَبُونَ ٢٦
২৭ ) এটা তো সারা জাহানের অধিবাসীদের জন্য একটা উপদেশ।
إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَٰلَمِينَ ٢٧
২৮ ) তোমাদের মধ্য থেকে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য, যে সত্য সরল পথে চলতে চায়। ২২
لِمَن شَآءَ مِنكُمْ أَن يَسْتَقِيمَ ٢٨
২৯ ) আর তোমাদের চাইলেই কিছু হয় না, যতক্ষণ না আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তা চান। ২৩
وَمَا تَشَآءُونَ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلْعَٰلَمِينَ ٢٩
১৬ .
অর্থাৎ তিনি ফেরেশতাদের কর্মকর্তা। সমস্ত ফেরেশতা তাঁর হুকুমে কাজ করে।
১৭.
অর্থাৎ নিজের পক্ষে থেকে তিনি কোন কথা আল্লাহর অহীর সাথে মিশিয়ে দেবেন না। বরং তিনি এমন পর্যায়ের আমানতদার যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে যা কিছু বলা হয় সেগুলো তিনি হুবহু পৌঁছিয়ে দেন।
১৮.
সাথী বলতে এখানে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বুঝানো হয়েছে। তাঁকে মক্কাবাসীদের সাথী অভিহিত করে আসলে তাঁকে এ বিষয়ের অনুভূতি দেয়া হয়েছে যে, তিনি তাদের জন্য কোন আগন্তুক বা অপরিচিত লোক নন। বরং তিনি তাদেরই জাতি ও গোত্রভুক্ত। তাদের মধ্যেই সারা জীবন তিনি অবস্থান করেছেন। তাদের শহরের প্রতিটি আবালবৃদ্ধবনিতা তাঁকে চেনে। তিনি কোন্ ধরনের জ্ঞানী, বুদ্ধিমান ও সচেতন ব্যক্তি তা তারা ভালোভাবেই জানে। এই ধরনের এক ব্যক্তিকে জেনেবুঝে পাগল বলতে গিয়ে তাদের অবশ্যই কিছুটা লজ্জা অনুভব করা উচিত। (আরো বেশী ব্যাখ্যার জন্য তাফহীমুল কুরআনের সূরা আন নাজমের ২ ও ৩ টীকা দেখুন)
১৯.
সূরা আন নাজমের ৭ থেকে ৯ পর্যন্ত টীকায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ পর্যবেক্ষণকে আরো বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। (ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, আন নাজম ৭-৮ টীকা)
২০.
অর্থাৎ রসূলুল্লাহ ﷺ তোমাদের কাছ থেকে কোন কথা গোপন রাখেন না। গায়েব থেকে তাঁর কাছে আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলী, ফেরেশতা, মৃত্যুর পরের জীবন, কিয়ামত, আখেরাত বা জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কে যা কিছু সত্য ও নির্ভুল তথ্য আসে তা সবই তিনি একটুও কমবেশী না করে তোমাদের কাছে বর্ণনা করেন।
২১.
অর্থাৎ কোন শয়তান এসে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কানে এসব কথা বলে যায়, তোমাদের এ ধারণা ভুল। শয়তান কেন মানুষকে শিরক, মূর্তিপূজা, কুফরী ও আল্লাহদ্রোহিতা থেকে সরিয়ে আল্লাহপরস্তি ও তাওহীদের শিক্ষা দেবে? কেন সে মানুষের মনে লাগামহীন উটের মতো স্বাধীন জীবন যাপন করার পরিবর্তে আল্লাহর দেয়া দায়িত্ব পালন ও তাঁর সামনে জবাবদিহি করার অনুভূতি জাগাবে? জাহেলী রীতিনীতি, জুলুম, দুর্নীতি ও দুস্কৃতির পথে চলতে বাধা দিয়ে কেন সে মানুষকে পবিত্র ও নিষ্কলুষ জীবন যাপন এবং ন্যায়, ইনসাফ, তাকওয়া ও উন্নত নৈতিক চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন করতে উদ্ধুদ্ধ করবে? এই ধরনের কাজ করা শয়তানের পক্ষে কোনক্রমেই সম্ভব নয়। (আরো ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, আশ শু’আরা ২১০-২১২ আয়াত ও ১৩০-১৩২ টীকা এবং ২২১-২২৩ আয়াত ও ১৪০-১৪১ টীকা)
২২.
অন্য কথায় বলা যায়, এ বাণীটি তো সারা দুনিয়ার মানুষের জন্য উপদেশ একথা ঠিক কিন্তু এর থেকে ফায়দা একমাত্র সেই ব্যক্তি হাসিল করতে পারে যে নিজে সত্য-সরল পথে চলতে চায়। এ থেকে উপকৃত হবার জন্য মানুষের সত্য-সন্ধানী ও সত্য প্রিয় হওয়া প্রথম শর্ত।
২৩.
এ বিষয়বস্তুটি ইতিপূর্বে সূরা মুদ্দাসসিরের ৫৬ আয়াতে এবং সূরা দাহারের ৩০ আয়াতে আলোচিত হয়েছে। (ব্যাখ্যার জন্য তাফহীমুল কুরআন, আল মুদ্দাসসির ৪১ টীকা দেখুন।)