আয়াত
১১ ) সে মৃত্যুকে ডাকবে
فَسَوْفَ يَدْعُوا۟ ثُبُورًا ١١
১২ ) এবং জ্বলন্ত আগুনে গিয়ে পড়বে।
وَيَصْلَىٰ سَعِيرًا ١٢
১৩ ) সে নিজের পরিবারের লোকদের মধ্যে ডুবে ছিল। ৯
إِنَّهُۥ كَانَ فِىٓ أَهْلِهِۦ مَسْرُورًا ١٣
১৪ ) সে মনে করেছিল, তাকে কখনো ফিরতে হবে না।
إِنَّهُۥ ظَنَّ أَن لَّن يَحُورَ ١٤
১৫ ) না ফিরে সে পারতো কেমন করে? তার রব তার কার্যকলাপ দেখছিলেন। ১০
بَلَىٰٓ إِنَّ رَبَّهُۥ كَانَ بِهِۦ بَصِيرًا ١٥
১৬ ) কাজেই না আমি কসম খাচ্ছি,
فَلَآ أُقْسِمُ بِٱلشَّفَقِ ١٦
১৭ ) আকাশের লাল আভার ও রাতের
وَٱلَّيْلِ وَمَا وَسَقَ ١٧
১৮ ) এবং তাতে যা কিছুর সমাবেশ ঘটে তার, আর চাঁদের, যখন তা পূর্ণরূপ লাভ করে।
وَٱلْقَمَرِ إِذَا ٱتَّسَقَ ١٨
১৯ ) তোমাদের অবশ্যি স্তরে স্তরে এক অবস্থা থেকে আর এক অবস্থার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ১১
لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَن طَبَقٍ ١٩
২০ ) তাহলে এদের কি হয়েছে, এরা ঈমান আনে না
فَمَا لَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ ٢٠
৯.
অর্থাৎ তার অবস্থা ছিল আল্লাহর সৎবান্দাদের থেকে আলাদা। আল্লাহর এই সৎ বান্দাদের সম্পর্কে সূরা ত্বা-হা’র ২৬ আয়াতে বলা হয়েছেঃ তারা নিজেদের পরিবারের লোকদের মধ্যে আল্লাহর ভয়ে ভীত লোকদের জীবন যাপন করতো। অর্থাৎ সবসময় তারা ভয় করতো নিজেদের সন্তান ও পরিবারের লোকদের প্রতি ভালবাসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদের দুনিয়ার স্বার্থ উদ্ধার করতে গিয়ে নিজের পরকাল বরবাদ না করে ফেলে। বিপরীত পক্ষে সেই ব্যক্তির অবস্থা ছিল এই যে, সে নিজের ঘরে আরামে সুখের জীবন যাপন করছিল। সন্তান-সন্তুতি ও পরিবারের লোকজনদের বিলাসী জীবন যাপনের জন্য যতই হারাম পদ্ধতি অবলম্বন এবং অন্যের অধিকার হরণ করার প্রয়োজন হোক না কেন তা তারা করে চলছিল। এই বিলাসী জীবন যাপন করতে গিয়ে আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখাগুলোকে সে চোখ বন্ধ করে ধ্বংস করে চলছিল।
১০.
অর্থাৎ সে যেসব কাজ কারবার করে যাচ্ছিল আল্লাহ সেগুলো উপেক্ষা করতেন এবং নিজের সামনে ডেকে তাকে কোন জিজ্ঞাসাবাদ করতেন না এমনটি ছিল আল্লাহর ইনসাফ ও হিকমতের পরিপন্থী।
১১.
অর্থাৎ তোমরা একই অবস্থার ওপর অপরিবর্তিত থাকবে না। বরং যৌবন থেকে বার্ধক্য, বার্ধক্য থেকে মৃত্যু থেকে বরযখ (মৃত্যু ও কিয়ামতের মাঝখানের জীবন), বরযখ থেকে পুনরুজ্জীবন, পুনরুজ্জীবন থেকে হাশরের ময়দান তারপর হিসেব নিকেশ এবং শাস্তি ও পুরস্কারের অসংখ্য মনযিল তোমাদের অবশ্যি অতিক্রম করতে হবে। এবিষয়ে তিনটি জিনিসের কসম খাওয়া হয়েছে। সূর্য অস্ত যাবার পর পশ্চিম আকাশের লালিমার, দিনের পর রাত্রির আঁধারও তার মধ্যে দিনের বেলা যেসব মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী পৃথিবীর চারদিকে বিচরণ করে তাদের একত্রে হওয়ার এবং চাঁদের সরু কাস্তের মতো অবস্থা থেকে পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়ে পূর্ণ চন্দ্রে পরিণত হওয়ার। অন্য কথায় বলা যায়, এ জিনিসগুলো প্রকাশ্যে সাক্ষ্য প্রদান করছে যে, মানুষ যে বিশ্ব-জাহানে বসবাস করে সেখানে কোন স্থিতিশীলতা নেই। সেখানে সর্বত্র একটি নিরন্তর পরিবর্তন ও ধারাবাহিক অবস্থান্তর প্রক্রিয়া কার্যকর রয়েছে। কাজেই শেষ নিঃশ্বাসটা বের হয়ে যাবার সাথে সাথে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে, মুশরিকদের এ ধারণা ঠিক নয়।