لَّيْسَ عَلَى ٱلضُّعَفَآءِ وَلَا عَلَى ٱلْمَرْضَىٰ وَلَا عَلَى ٱلَّذِينَ لَا يَجِدُونَ مَا يُنفِقُونَ حَرَجٌ إِذَا نَصَحُوا۟ لِلَّهِ وَرَسُولِهِۦ ۚ مَا عَلَى ٱلْمُحْسِنِينَ مِن سَبِيلٍۢ ۚ وَٱللَّهُ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ
দুর্বল ও রুগ্ন লোকেরা এবং যেসব লোক জিহাদে শরীক হবার জন্য পাথেয় পায় না, তারা যদি পিছনে থেকে যায় তাহলে তাতে কোন ক্ষতি নেই, যখন তারা আন্তরিকভাবে আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বস্ত। ৯২ এ ধরনের সৎকর্মশীলদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন অবকাশই নেই। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
৯২
এ থেকে জানা যায় যারা বাহ্যত অক্ষম, তাদের জন্য ও নিছক শারীরিক দুর্বলতা, রুগ্নতা, বা নিছক অপরাগতা দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি লাভের জন্য নয়। বরং তাদের অক্ষমতা গুলো কেবলমাত্র তখনই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি লাভের কারণ হতে পারে যখন তারা হবে আল্লাহ ও তার রসূলের সত্যিকার বিশ্বস্ত ও অনুগত। অন্যথায় কোন ব্যক্তির মধ্যে যদি বিশ্বস্ততা না থাকে তাহলে তাকে শুধুমাত্র এ জন্য মাফ করা যেতে পারে না যে, কর্তব্য পালনের সময় সে রোগগ্রস্ত বা অপরাগ ছিল। আল্লাহ শুধু বাইরের অবস্থাই দেখন না। তাই যেসব লোক অসুস্থতার ডাক্তারি সার্টিফিকেট অথবা বার্ধক্য ও শারীরিক ত্রুটির ওযর পেশ করবে তাদেরকে আল্লাহর দরবারেও তদ্রূপ অক্ষম গণ্য করা হবে এবং তাদেরকে আর কোন প্রকার জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হবে না, একথা ঠিক নয়। তিনি তো তাদের প্রত্যেক ব্যক্তির মন-মানসিকতা বিশ্লেষণ করবেন, তার সমগ্র গোপন ও আপাতদৃষ্ট আচরণ নিরীক্ষণ করবেন এবং তাদের অক্ষমতা কোন বিশ্বস্ত বান্দার অক্ষমতার পর্যায়ভুক্ত ছিল না, বিদ্রোহীর পর্যায়ভুক্ত তা যাচাই করবেন কেউ কেউ এমন আছে যে, কর্তব্যের ডাক শুনে লাখো লাখো, শুকরিয়া আদায় করে এবং মনে মনে বলে, বড় ভালো সময়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। নয়তো কোনক্রমেই এ বিপদের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যেতো না এবং অনর্থক আমাকে গঞ্জনা ভুগতে হতো। আবার অন্য একজন এ একই ডাক শুনে অস্থির না হয়ে উঠে বলে হায় কেমন এক সময় আমি অসুখে পড়লাম। যখন মাঠে ময়দানে নেমে কাজ করার সময় তখন কিনা আমি বিছানায় শুয়ে শুয়ে অযথা সময় নষ্ট করছি। একজন নিজের রোগকে কর্তব্যের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য বাহানা হিসেবে ব্যবহার তো করছিলই এ সঙ্গে সে অন্যদেরকে ও এ কর্তব্য পালনে বাধা দেবার চেষ্টা করলো। অন্যজন বাধ্য হয়ে রোগা শয্যায় পড়ে থাকলেও বারবার নিজের ভাই-বেরাদার, আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জিহাদ করতে উদ্বুদ্ধ করে চলছিল এবং নিজের সেবা ও শুশ্রূষাকারীদেরকেও বলে চলছিল, আমাকে আল্লাহর হাতে সোর্পদ করে দিয়ে যাও। ওষুধ ও পথ্যের ব্যবস্থা কোন না কোনভাবে হয়ে যাবেই। আমার একজনের জন্য আল্লাহর সত্য দ্বীনের সেবায় নিবেদিত মূল্যবান সময়টি তোমরা নষ্ট করো না। একজন অসুস্থতার অজুহাতে ঘরে বসে থেকে যুদ্ধের সারাটা সময় মানুষের মন ভাঙ্গাবার, দুঃসংবাদ ছড়াবার, যুদ্ধের প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার এবং মুজাহিদের অনুপস্থিতিতে তাদের পারিবারিক কাজ করে। অন্যজন নিজেকে যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত হবার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হতে দেখে জেহাদের ঘরোয়া অঙ্গনকে (Home front) মজবুত রাখার জন্য নিজের সাধ্যমতো প্রচেষ্টা চালায়। বাহ্যত এরা দুজনই অক্ষম। কিন্তু আল্লাহর দৃষ্টিতে এ দুই ধরনের অক্ষমরা কখনো সমান হতে পারে না। আল্লাহ যদি ক্ষমা করেন তাহলে কেবল এ দ্বিমত জনকেই ক্ষমা করবেন। আর প্রথমে ব্যক্তি নিজের অক্ষমতা সত্ত্বেও বিশ্বাসঘাতকতা ও নাফরমানীর অপরাধে অভিযুক্ত হবে।