আয়াত
৬১ ) তাদের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা নিজেদের কথা দ্বারা নবীকে কষ্ট দেয় এবং বলে এ ব্যক্তি অতিশয় কর্ণপাতকারী। ৬৯ বলে দাও, “সে এরূপ করে কেবল তোমাদের ভালোর জন্যই। ৭০ সে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং ঈমানদারদেরকে বিশ্বাস করে। ৭১ তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমানদার তাদের জন্য সে পরিপূর্ণ রহমত। আর যারা আল্লাহর রসূলকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।”
وَمِنْهُمُ ٱلَّذِينَ يُؤْذُونَ ٱلنَّبِىَّ وَيَقُولُونَ هُوَ أُذُنٌ قُلْ أُذُنُ خَيْرٍ لَّكُمْ يُؤْمِنُ بِٱللَّهِ وَيُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِينَ وَرَحْمَةٌ لِّلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مِنكُمْ وَٱلَّذِينَ يُؤْذُونَ رَسُولَ ٱللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ٦١
৬২ ) তারা তোমাদের সন্তুষ্ট করার জন্য তোমাদের সামনে কসম খায়। অথচ যদি তার মুমিন হয়ে থাকে তাহলে তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে সন্তুষ্ট করার কথা চিন্তা করবে, কারণ তারাই এর বেশী হকদার।
يَحْلِفُونَ بِٱللَّهِ لَكُمْ لِيُرْضُوكُمْ وَٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥٓ أَحَقُّ أَن يُرْضُوهُ إِن كَانُوا۟ مُؤْمِنِينَ ٦٢
৬৩ ) তারা কি জানে না, যারা আল্লাহ ও তার রসূলের মোকাবিলা করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন, তার মধ্য তারা চিরকাল থাকবে। এটি একটি বিরাট লাঞ্ছনার ব্যাপার।
أَلَمْ يَعْلَمُوٓا۟ أَنَّهُۥ مَن يُحَادِدِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَأَنَّ لَهُۥ نَارَ جَهَنَّمَ خَٰلِدًا فِيهَا ذَٰلِكَ ٱلْخِزْىُ ٱلْعَظِيمُ ٦٣
৬৪ ) এ মুনাফিকরা ভয় করেছে, মুসলমানদের ওপর এমন একটি সূরা না নাযিল হয়ে যায়, যা তাদের মনের গোপন কথাপ্রকাশ করে দেবে। ৭২ হে নবী! তাদের বলে দাও, “বেশ ঠাট্টা করতেই থাকো, তবে তোমরা যে জিনিসটির প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয় করছো আল্লাহ তা প্রকাশ করে দেবেন।”
يَحْذَرُ ٱلْمُنَٰفِقُونَ أَن تُنَزَّلَ عَلَيْهِمْ سُورَةٌ تُنَبِّئُهُم بِمَا فِى قُلُوبِهِمْ قُلِ ٱسْتَهْزِءُوٓا۟ إِنَّ ٱللَّهَ مُخْرِجٌ مَّا تَحْذَرُونَ ٦٤
৬৫ ) যদি তাদের জিজ্ঞেস করো, তোমরা কি কথা বলছিলে? তাহলে তারা ঝটপট বলে দেবে, আমরা তো হাসি-তামাসা ও পরিহাস করছিলাম। ৭৩ তাদের বলো, তোমাদের হাসি-তামাসা কি আল্লাহ, তাঁর আয়াত ও তাঁর রসূলের সাথে ছিল?
وَلَئِن سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ قُلْ أَبِٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمْ تَسْتَهْزِءُونَ ٦٥
৬৬ ) এখন আর ওযর পেশ করো না। তোমরা ঈমান আনার পর কুফরী করেছো, যদি আমরা তোমাদের একটি দলকে মাফও করে দেই তাহলে আরেকটি দলকে তো আমরা অবশ্যই শাস্তি দেবো। কারণ তারা অপারাধী। ৭৪
لَا تَعْتَذِرُوا۟ قَدْ كَفَرْتُم بَعْدَ إِيمَٰنِكُمْ إِن نَّعْفُ عَن طَآئِفَةٍ مِّنكُمْ نُعَذِّبْ طَآئِفَةًۢ بِأَنَّهُمْ كَانُوا۟ مُجْرِمِينَ ٦٦
৬৭ ) মুনাফিক পুরুষ ও নারী পরস্পরের দোসর। খারাপ কাজের হুকুম দেয়, ভাল কাজের নিষেধ করে এবং কল্যাণ থেকে নিজেদের হাত গুটিয়ে রাখে। ৭৫ তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে, ফলে আল্লাহও তাদেরকে ভুলে গেছেন।
ٱلْمُنَٰفِقُونَ وَٱلْمُنَٰفِقَٰتُ بَعْضُهُم مِّنۢ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِٱلْمُنكَرِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ ٱلْمَعْرُوفِ وَيَقْبِضُونَ أَيْدِيَهُمْ نَسُوا۟ ٱللَّهَ فَنَسِيَهُمْ إِنَّ ٱلْمُنَٰفِقِينَ هُمُ ٱلْفَٰسِقُونَ ٦٧
৬৮ ) নিশ্চিতভাবেই এ মুনাফিকরাই ফাসেক। এ মুনাফিক পুরুষ ও নারী এবং কাফেরদের জন্য আল্লাহ জাহান্নামের আগুনের ওয়াদা করেছেন। তার মধ্যে তারা চিরকাল থাকবে। সেটিই তাদের জন্য উপযুক্ত। আল্লাহর অভিশাপ তাদের ওপর এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আযাব।
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلْمُنَٰفِقِينَ وَٱلْمُنَٰفِقَٰتِ وَٱلْكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ خَٰلِدِينَ فِيهَا هِىَ حَسْبُهُمْ وَلَعَنَهُمُ ٱللَّهُ وَلَهُمْ عَذَابٌ مُّقِيمٌ ٦٨
৬৯ ) তোমাদের ৭৬ আচরণ তোমাদের পূর্ববর্তীদের মতোই। তারা ছিল তোমাদের চাইতে বেশী শক্তিশালী এবং তোমাদের চাইতে বেশী সম্পদ ও সন্তানের মালিক। তারপর তারা দুনিয়ায় নিজেদের অংশের স্বাদ উপভোগ করেছে এবং তোমরাও একইভাবে নিজেদের অংশের স্বাদ উপভোগ করেছো। যেমন তারা করেছিল এবং তারা যেমন অনর্থক বিতর্কে লিপ্ত ছিল তেমনি বিতর্কে তোমরাও লিপ্ত রয়েছো। কাজেই তাদের পরিণতি হয়েছে এই যে, দুনিয়ায় ও আখেরাতে তাদের সমস্ত কাজকর্ম পণ্ড হয়ে গেছে এবং তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
كَٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ كَانُوٓا۟ أَشَدَّ مِنكُمْ قُوَّةً وَأَكْثَرَ أَمْوَٰلًا وَأَوْلَٰدًا فَٱسْتَمْتَعُوا۟ بِخَلَٰقِهِمْ فَٱسْتَمْتَعْتُم بِخَلَٰقِكُمْ كَمَا ٱسْتَمْتَعَ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُم بِخَلَٰقِهِمْ وَخُضْتُمْ كَٱلَّذِى خَاضُوٓا۟ أُو۟لَٰٓئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَٰلُهُمْ فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْءَاخِرَةِ وَأُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْخَٰسِرُونَ ٦٩
৭০ ) তাদের ৭৭ কাছে কি তাদের পূর্ববর্তীদের ইতিহাস পৌঁছেনি? নূহের জাতির, আদ, সামূদ ও ইবরাহীমের জাতির, মাদইয়ানের অধিবাসীদের এবং যে জনবসতিগুলো উল্টে দেয়া হয়েছিল সেগুলোর? ৭৮ তাদের রসূলগণ সুস্পষ্ট নিশানীসহ তাদের কাছে এসেছিলেন। এরপর তাদের ওপর জুলুম করা আল্লাহর কাজ ছিল না বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছিলেন। ৭৯
أَلَمْ يَأْتِهِمْ نَبَأُ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ قَوْمِ نُوحٍ وَعَادٍ وَثَمُودَ وَقَوْمِ إِبْرَٰهِيمَ وَأَصْحَٰبِ مَدْيَنَ وَٱلْمُؤْتَفِكَٰتِ أَتَتْهُمْ رُسُلُهُم بِٱلْبَيِّنَٰتِ فَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيَظْلِمَهُمْ وَلَٰكِن كَانُوٓا۟ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ ٧٠
৬৯.
মুনাফিকরা নবী (সা.) এর বিরুদ্ধে যেসব দোষারোপ করতো তার মধ্যে একটি ছিল এই যে, তিনি সবার কথা শুনতেন এবং প্রত্যেককে তার নিজের কথা বলার সুযোগ দিতেন। তাদের দৃষ্টিতে এ গুণটি ছিল দোষ। তারা বলতো, তিনি কান পাতলা লোক। যার ইচ্ছা হয়, সেই তার কাছে পৌঁছে যায়, যেভাবে ইচ্ছা তার কান ভরে দেয় এবং তিনি তার কথা মেনে নেন। এ ব্যাপারটির তারা খুব বেশী করে চর্চা করতো। এর সবচেয়ে বড় কারণ ছিল এই যে, সাচ্চা ঈমানদাররা এসব মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র, এদের শয়তানী কাজকারবার ও বিরোধিতাপূর্ণ কথাবার্তার রিপোর্ট নবী (সা.) এর কাছে পৌঁছে দিতেন। এতে এ মুনাফিকরা গোস্বা হয়ে বলতো, আপনি আমাদের মতো সম্মানিত ভদ্র লোকদের বিরুদ্ধে যে কোন কাঙ্গাল-ভিখারীর দেয়া খবরে বিশ্বাস করে বসেন।
৭০.
এ দোষারোপের জবাবে একটি ব্যাপক অর্থবোধক কথা বলা হয়েছে। এর দুটো দিক রয়েছে। এক, তিনি বিপর্যয়, বিকৃতি ও দুষ্কৃতির কথা শোনার মতো লোক নন। বরং তিনি শুধুমাত্র এমনসব কথায় কান দেন যেগুলোর মধ্যে রয়েছে মঙ্গল ও সুকৃতি এবং উম্মতের কল্যাণ ও দ্বীনের কল্যাণের জন্য যেগুলোতে কান দেয়া শুভ ফলদায়ক। দুই, তার এমন ধরনের হওয়া তোমাদের জন্যই কল্যাণকর। যদি তিনি প্রত্যেকের কথা না শুনতেন এবং ধৈর্য ও সংযমের সাথে কাজ না করতেন, তাহলে তোমরা ঈমানের যে মিথ্যা দাবী করে থাকো, শুভেচ্ছার, যেসব লোক দেখানো বুলি, আওড়ে যাও এবং আল্লাহর পথ থেকে সটকান দেয়ার জন্য যেসব ঠুনকো ওযর পেশ করে থাকো, সেগুলো ধৈর্য সহকারে শুনার পরিবর্তে তিনি তোমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবলম্বন করতেন। তার ফলে এ মদীনা শহরে জীবনধারণ করা তোমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়তো। কাজেই তার এ গুণটি তোমাদের জন্য খারাপ নয় বরং ভাল।
৭১.
অর্থাৎ তিনি প্রত্যেকের কথা বিশ্বাস করেন, তোমাদের এ ধারণা ভুল। তিনি যদিও সবার কথাই শোনেন, কিন্তু বিশ্বাস করেন একমাত্র যথার্থ ও সাচ্চা মু’মিনদের কথা। তোমাদের যেসব শয়তানী ও দুষ্কৃতির খবর তার কাছে পৌঁছে গেছে এবং যেগুলো তিনি বিশ্বাস করে ফেলেছেন, সেগুলো দুষ্কৃতিকারী চোগলখোরদের সরবরাহ করা নয় বরং সৎ ঈমানদার লোকেরাই সেগুলো সরবরাহ করেছে এবং সেগুলো নির্ভরযোগ্য।
৭২.
তারা নবী (সা.) এর নবুওয়াতে সঠিক অর্থে বিশ্বাসী ছিল না। কিন্তু বিগত আট নয় বছরের অভিজ্ঞতায় তারা বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছিল যে, তার কাছে নিশ্চয়ই এমন কোন না কোন অতি প্রাকৃতিক তথ্য-মাধ্যম আছে, যার সাহায্যে তিনি তাদের গোপন কথা জানতে পারেন এবং এভাবে অনেক সময় কুরআনে (যাকে তারা রসূলের নিজের রচনা বলে মনে করতো) তাদের মুনাফিকী ও চক্রান্তসমূহ প্রকাশ করে দেন।
৭৩.
তাবুকের যুদ্ধের সময় মুনাফিকরা প্রায়ই তাদের আসরগুলোয় বসে নবী (সা.) ও মুসলমানদের নিয়ে হাসি-তামাসা ও বিদ্রূপ করতো। এভাবে তারা যাদেরকে সদুদ্দেশ্যে জিহাদ করতে প্রস্তুত দেখাতো নিজেদের বিদ্রূপ পরিহাসের মাধ্যমে তাদেরকে হিম্মাতহারা করার চেষ্টা করতো। হাদীসে এ ধরনের লোকদের বহু উক্তি উদ্ধৃত হয়েছে। যেমন এক মাহফিলে কয়েক জন মুনাফিক বসে আড্ডা দিচ্ছিল। তাদের একজন বললো, আরে এ রোমানদেরকেও কি তোমরা আরবদের মতো মনে করেছো? কালকে দেখে নিও এ যেসব বীর বাহাদুর লড়তে এসেছেন এদের সবাইকে রশি দিয়ে বেধে রাখা হবে। দ্বিতীয় জন বললো, মজা হবে তখন যখন একশটি করে চাবুক মারার নির্দেশ দেয়া হবে। আরেক মুনাফিক নবী (সা.) কে যুদ্ধ প্রস্তুতিতে বিপুলভাবে কর্মতৎপর দেখে নিজের ইয়ার বন্ধুদের বললোঃ উনাকে দেখো উনি রোমও সিরিয়ার দুর্গ জয় করতে চলেছেন।
৭৪.
অর্থাৎ বুদ্ধি সম্পন্ন ভাঁড়দেরকে তো তবুও মাফ করে দেয়া যেতে পারে। কারণ তারা হয়েতো এ ধরনের কথা শুধু এ জন্য বলে যাচ্ছে যে, তাদের কাছে দুনিয়ার কোন জিনিসেরই কোন গুরুত্ব নেই। সব কিছুতেই তারা হালকা নজরে দেখে। কিন্তু যারা জেনে-বুঝে নিজেদের ঈমানের দাবী সত্ত্বেও শুধুমাত্র রসূলকে এবং তিনি যে দ্বীন এনেছেন তাকে হাস্য সম্পদ মনে করার কারণেই একথা বলে থাকে এবং যাদের বিদ্রূপের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈমানদারদের হিম্মাত ও সাহস যেন নিস্তেজ হয়ে যায় এবং তারা যেন পূর্ণ শক্তিতে জিহাদের প্রস্তুতি নিতে না পারে। এরূপ অসদুদ্দেশ্য প্রণোদিত যারা তাদেরকে তো কোন ক্রমেই ক্ষমা করা যেতে পারে না। কারণ তারা ভাঁড় নয়, তারা অপরাধী।
৭৫.
সমস্ত মুনাফিকের এটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য। তারা সবাই খারাপ কাজের ব্যাপারে আগ্রহী এবং ভাল কাজের প্রতি তাদের প্রচণ্ড অনীহা ও শত্রুতা। কোন ব্যক্তি খারাপ কাজ করতে চাইলে তারা তার প্রতি সহানুভূতিশীল হয়। তাকে পরামর্শ দেয়। তার মনে সাহস যোগায়। তাকে সাহায্য-সহায়তা দান করে। তার জন্য সুপারিশ পেশ করে। তার প্রশংসা করে। মোটকথা তার জন্য নিজেদের সব কিছুই তারা ওয়াকফ করে দেয়। মনেপ্রাণে তারা তার ঐ খারাপ কাজে শরীক হয়। অন্যদেরকে ও তাতে অংশগ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করে। আর যে ব্যক্তি খারাপ কাজ করে এরা তার সাহস বাড়াতে থাকে। তাদের প্রতিটি অঙ্গ ভাঙ্গি ও নড়াচড়া থেকে একথা প্রকাশ হতে থাকে যে, এ অসৎ কাজটির বিস্তার ঘটলে তাদের হৃদয়ে কিছুটা প্রশান্তি অনুভূত হতে থাকে এবং তাদের চোখ জুড়িয়ে যায়। অন্যদিকে কোন ভাল কাজ হতে থাকলে তার খবর শুনে তারা মনে ব্যথা অনুভব করতে থাকে। একথার কল্পনা করতেই তাদের মন বিষিয়ে ওঠে। এ সম্পর্কিত কোন প্রস্তাবও তারা শুনতে পারে না। এর দিকে কাউকে এগিয়ে যেতে দেখলে তারা অস্থির হয়ে পড়ে। সম্ভাব্য সকল পদ্ধতিতে তার পথে বাধা সৃষ্টি করতে সক্ষম নাহলে যাতে সে এ কাজে সফলকাম না হতে পারে এ জন্য তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। তাছাড়া ভাল কাজে অর্থ ব্যয় করার জন্য তাদের হাত কখনো এগিয়ে আসে না, এটাও তাদের একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য। তারা কৃপণ হোক বা দানশীল সর্বাবস্থায় এটা দেখা যায়। তাদের অর্থ সিন্দুকে জমা থাকে, আর নয়তো হারাম পথে আসে হারাম পথে ব্যয় হয়। অসৎ কাজের ব্যাপারে তারা যেন নিজেদের যুগের কারূন (অর্থাৎ দেদার অর্থ ব্যয় করতে পারঙ্গম) সৎকাজের ব্যাপারে তারা চরম দরিদ্র।
৭৬ .
মুনাফিকদের সম্পর্কে আলোচনা প্রথম পুরুষে করতে করতে হঠাৎ এখানথেকে আবার তাদেরকে সরাসরি সম্বোধন করা শুরু হয়েছে।
৭৭ .
এখান থেকে আবার তাদের আলোচনা শুরু হয়েছে প্রথম পুরুষে।
৭৮.
লূত জাতির জনবসতিগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
৭৯.
অর্থাৎ তাদের সাথে আল্লাহর কোন শত্রুতা ছিল এবং তিনি তাদেরকে ধ্বংস করতে চাচ্ছিলেন বলে তারা ধ্বংস হয়নি। বরং প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেরাই এমন ধরনের জীবন যাপন প্রণালী পছন্দ করে নিয়েছিল যা তাদেরকে ধ্বংসের দিকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। আল্লাহ তাদের চিন্তা-ভাবনা করারও সামলে নেবার পূর্ণ সুযোগ দিয়েছিলেন। তাদেরকে উপদেশ দেবার ও পরিচালনা করার জন্য রসূল পাঠিয়েছিলেন। রসূলদের মাধ্যমে ভুল পথে অবলম্বন করার অনিষ্টকর ফলাফল সম্পর্কে তাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন এবং কোন প্রকার রাখ ঢাক না করে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে তাদেরকে সাফল্য ও ধ্বংসের পথ বাতলে দিয়েছিলেন। কিন্তু যখন তারা অবস্থার সংশোধনের কোন একটি সুযোগেরও সদ্ব্যবহার করলো না এবং ধ্বংসের পথে চলার ওপর অবিচল থাকলো তখন তাদের অনিবার্য পরিণতির সম্মুখীন হতেই হলো। তাদের ওপর এ জুলুম আল্লাহ করেননি বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছিল।