আল-ফাতিহা ১ - আল-বাকারা ১৪১
আল-বাকারা ১৪২ - আল-বাকারা ২৫২
আল-বাকারা ২৫৩ - আল-ইমরান ৯২
আল-ইমরান ৯৩ - আন-নিসা ২৩
আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭
আন-নিসা ১৪৮ - আল-মায়িদাহ ৮১
আল-মায়িদাহ ৮২ - আল-আন‘আম ১১০
আল-আন‘আম ১১১ - আল-আ‘রাফ ৮৭
আল-আ‘রাফ ৮৮ - আল-আনফাল ৪০
আল-আনফাল ৪১ - আত-তাওবাহ ৯২
আত-তাওবাহ ৯৩ - হুদ ৫
হুদ ৬ - ইউসুফ ৫২
ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২
আল-হিজর ১ - আন-নাহল ১২৮
বনী ইসরাঈল ১ - আল-কাহফ ৭৪
আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫
আল-আম্বিয়া ১ - আল-হাজ্জ ৭৮
আল-মুমিনুন ১ - আল-ফুরকান ২০
আল-ফুরকান ২১ - আন-নামল ৫৫
আন-নামল ৫৬ - আল-‘আনকাবুত ৪৫
আল-‘আনকাবুত ৪৬ - আল-আহযাব ৩০
আল-আহযাব ৩১ - ইয়া-সীন ২৭
ইয়া-সীন ২৮ - আয-যুমার ৩১
আয-যুমার ৩২ - ফুসসিলাত ৪৬
ফুসসিলাত ৪৭ - আল-জাসিয়াহ ৩৭
আল-আহকাফ ১ - আয-যারিয়াত ৩০
আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯
আল-মুজাদালাহ ১ - আত-তাহরীম ১২
আল-মুলক ১ - আল-মুরসালাত ৫০
আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬
ঠিক এ একই ব্যাপার চলছিল এ আয়াতগুলো নাযিল হবার সময় মক্কার কাফের সমাজ ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মধ্যে। এ জিনিসটি সামনে রাখলে হযরত নূহ ও তাঁর জাতির সরদারদের এ কথোপকথন এখানে শুনানো হচ্ছে কেন তা বুঝা যেতে পারে। মক্কার কাফেরদের বড় বড় সরদার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতো, আমরা এই বেলাল, আম্মার, সুহাইবের মতো গোলাম এবং শ্রমজীবী মানুষের সাথে কেমন করে বসতে পারি। তাদের কথার অর্থ যেন এ ছিল যে, মু’মিনদের দল থেকে যদি এ গরীবদের বের করে দেয়া হয় তাহলেই না এ অভিজাতদের ওদিক মুখো হবার সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে। অন্যথায় সুলতান মাহমুদ ও তার ভৃত্য আয়াযের এক কাতারে দাঁড়ানো কোন ক্রমেই সম্ভব নয়। এ অবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরিষ্কার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এ নির্দেশ দেয়া হয়, যারা সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এমন সব অহংকারীদের জন্য ঈমান গ্রহণকারী গরীবদেরকে ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া যেতে পারে নাঃ
أَمَّا مَنِ اسْتَغْنَى - فَأَنْتَ لَهُ تَصَدَّى - وَمَا عَلَيْكَ أَلَّا يَزَّكَّى - وَأَمَّا مَنْ جَاءَكَ يَسْعَى - وَهُوَ يَخْشَى - فَأَنْتَ عَنْهُ تَلَهَّى - كَلَّا إِنَّهَا تَذْكِرَةٌ - فَمَنْ شَاءَ ذَكَرَهُ
“হে মুহাম্মাদ! যে বেপরোয়া ভাব দেখালো তুমি তার প্রতি মনোযোগী হলে? অথচ যদি সে সংশোধিত না হয়, তাহলে তোমার উপর কি দায়িত্ব আছে? আর যে ব্যক্তি মনে আল্লাহর ভয় নিয়ে তোমার কাছে ছুটে আসে তুমি তাকে অবজ্ঞা করছো? কখখনো না, এতো একটি উপদেশ, যার মন চায় একে গ্রহণ করে নেবে।” (সূরা আবাসাঃ ৫-১২ আয়াত)
وَلَا تَطْرُدِ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ مَا عَلَيْكَ مِنْ حِسَابِهِمْ مِنْ شَيْءٍ وَمَا مِنْ حِسَابِكَ عَلَيْهِمْ مِنْ شَيْءٍ فَتَطْرُدَهُمْ فَتَكُونَ مِنَ الظَّالِمِينَ- وَكَذَلِكَ فَتَنَّا بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لِيَقُولُوا أَهَؤُلَاءِ مَنَّ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنْ بَيْنِنَا أَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِالشَّاكِرِينَ
“যারা দিনরাত নিজেদেরকে রব ডাকছে নিছক তাকে সন্তুষ্ট করার জন্য তাদেরকে দূরে নিক্ষেপ করো না। তোমার ওপর তাদের কোন দায়দায়িত্ব নেই এবং তাদের ওপরও তোমার কোন দায়দায়িত্ব নেই। এরপরও যদি তুমি তাদেরকে দূরে নিক্ষেপ করো তাহলে তুমি জালেমদের মধ্যে গণ্য হবে। আমি তো এভাবে তাদের মধ্য থেকে কতককে কতকের মাধ্যমে পরীক্ষার মধ্যে ফেলে দিয়েছি, যাতে তারা বলেঃ ‘আমাদের মধ্যে কি কেবল এ লোকেরাই অবশিষ্ট ছিল, যাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ বর্ষিত হয়েছে?’ হ্যাঁ, আল্লাহ নিজের কৃতজ্ঞ বান্দাদেরকে কি এরচেয়ে বেশী জানেন না?” (আল আন’আমঃ ৫২ আয়াত)
فَلَبِثَ فِيهِمْ أَلْفَ سَنَةٍ إِلَّا خَمْسِينَ عَامًا
“তারপর তিনি তাদের মধ্যে বসবাস করেন সাড়ে নয় শত বছর।” (১৪ আয়াত)
এ দীর্ঘ সময়ে হযরত নূহ বংশ পরম্পরায় তাদের সামাজিক কার্যক্রম দেখে বুঝতে পারেন যে, কেবল তাদের মধ্যেই সত্যকে গ্রহণ করার যোগ্যতা খতম হয়ে যায়নি। বরং তাদের ভবিষ্যত বংশধরদের মধ্যেও সৎ ও ঈমানদার মানুষের জন্ম হবার আশা নেই।
إِنَّكَ إِنْ تَذَرْهُمْ يُضِلُّوا عِبَادَكَ وَلَا يَلِدُوا إِلَّا فَاجِرًا كَفَّارًا
“হে পরওয়ারদিগার! যদি তুমি তাদেরকে ছেড়ে দাও, তাহলে তারা তোমার বান্দাদেরকে গোমরাহ করবে এবং তাদের বংশে যে-ই জন্ম নেবে সে-ই হবে চরিত্রহীন ও কঠোর সত্য অস্বীকারকারী।” (নূহঃ ২৭ আয়াত)
আল্লাহ নিজেও নূহের এ অভিমতকে সঠিক বলে স্বীকার করেন এবং নিজের পূর্ণ ও নির্ভুল জ্ঞানের ভিত্তিতে বলেনঃ
لَنْ يُؤْمِنَ مِنْ قَوْمِكَ إِلَّا مَنْ قَدْ آمَنَ فَلَا تَبْتَئِسْ بِمَا كَانُوا يَفْعَلُونَ
“তোমাদের সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে যারা ঈমান এনেছে তারা ছাড়া এখন আর ঈমান আনার মত কেউ নেই। কাজেই এখন তাদের কার্যকলাপের জন্য দুঃখ করা থেকে বিরত হও।” (হূদঃ ৩৬ আয়াত)