আলে ইমরান

২০০ আয়াত

بِسْمِ ٱللّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
৩১ ) হে নবী! লোকদের বলে দাওঃ “যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহ‌কে ভালোবাসো, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ‌ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন। তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।” তাদেরকে বলোঃ আল্লাহ‌ ও রসূলের আনুগত্য করো।
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِى يُحْبِبْكُمُ ٱللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ ٣١
৩২ ) তারপর যদি তারা তোমাদের এ দাওয়াত গ্রহণ না করে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ‌ এমন লোকদের ভালোবাসবেন না, যারা তাঁর ও তাঁর রসূলদের আনুগত্য করতে অস্বীকার করে। ২৮
قُلْ أَطِيعُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ فَإِن تَوَلَّوْا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلْكَٰفِرِينَ ٣٢
৩৩ ) আল্লাহ্‌ ২৯ আদম, নূহ, ইবরাহীমের বংশধর ও ইমরানের বংশধরদেরকে ৩০ সমগ্র বিশ্ববাসীর ওপর প্রাধান্য দিয়ে (তাঁর রিসালাতের জন্য) মনোনীত করেছিলেন।
إِنَّ ٱللَّهَ ٱصْطَفَىٰٓ ءَادَمَ وَنُوحًا وَءَالَ إِبْرَٰهِيمَ وَءَالَ عِمْرَٰنَ عَلَى ٱلْعَٰلَمِينَ ٣٣
৩৪ ) এরা সবাই একই ধারায় অন্তর্গত ছিল, একজনের উদ্ভব ঘটেছিল অন্যজনের বংশ থেকে। আল্লাহ‌ সবকিছু শোনেন ও জানেন। ৩১
ذُرِّيَّةًۢ بَعْضُهَا مِنۢ بَعْضٍ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ٣٤
৩৫ ) (তিনি তখন শুনছিলেন) যখন ইমরানের মহিলা ৩২ বলছিলঃ “হে আমার রব! আমার পেটে এই যে সন্তানটি আছে এটি আমি তোমার জন্য নজরানা দিলাম, সে তোমার জন্য উৎসর্গীত হবে। আমার এই নজরানা কবুল করে নাও। তুমি সবকিছু শোনো ও জানো।” ৩৩
إِذْ قَالَتِ ٱمْرَأَتُ عِمْرَٰنَ رَبِّ إِنِّى نَذَرْتُ لَكَ مَا فِى بَطْنِى مُحَرَّرًا فَتَقَبَّلْ مِنِّىٓ إِنَّكَ أَنتَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ ٣٥
৩৬ ) তারপর যখন সেই শিশু কন্যাটি তার ওখানে জন্ম নিল, সে বললোঃ “হে আমার প্রভু! আমার এখানে তো মেয়ে জন্ম নিয়েছে। অথচ সে যা প্রসব করেছিল তা আল্লাহ‌র জানাই ছিল।-আর পুত্র সন্তান কন্যা সন্তানের মতো হয় না। ৩৪ যা হোক আমি তার নাম রেখে দিলাম মারয়াম। আর আমি তাকে ও তার ভবিষ্যৎ বংশধরদেরকে অভিশপ্ত শয়তানের ফিতনা থেকে রক্ষার জন্য তোমার আশ্রয়ে সোপর্দ করছি।”
فَلَمَّا وَضَعَتْهَا قَالَتْ رَبِّ إِنِّى وَضَعْتُهَآ أُنثَىٰ وَٱللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا وَضَعَتْ وَلَيْسَ ٱلذَّكَرُ كَٱلْأُنثَىٰ وَإِنِّى سَمَّيْتُهَا مَرْيَمَ وَإِنِّىٓ أُعِيذُهَا بِكَ وَذُرِّيَّتَهَا مِنَ ٱلشَّيْطَٰنِ ٱلرَّجِيمِ ٣٦
৩৭ ) অবশেষে তার রব কন্যা সন্তানটিকে সন্তুষ্টি সহকারে কবুল করে নিলেন, তাকে খুব ভালো মেয়ে হিসেবে গড়ে তুললেন এবং যাকারিয়াকে বানিয়ে দিলেন তার অভিভাবক। যাকারিয়া ৩৫ যখনই তার কাছে মিহরাবে ৩৬ যেতো, তার কাছে কিছু না কিছু পানাহার সামগ্রী পেতো। জিজ্ঞেস করতোঃ “মারয়াম! এগুলো তোমরা কাছে কোথা থেকে এলো?” সে জবাব দিতোঃ আল্লাহ‌র কাছ থেকে এসেছে। আল্লাহ‌ যাকে চান, বেহিসেব দান করেন।
فَتَقَبَّلَهَا رَبُّهَا بِقَبُولٍ حَسَنٍ وَأَنۢبَتَهَا نَبَاتًا حَسَنًا وَكَفَّلَهَا زَكَرِيَّا كُلَّمَا دَخَلَ عَلَيْهَا زَكَرِيَّا ٱلْمِحْرَابَ وَجَدَ عِندَهَا رِزْقًا قَالَ يَٰمَرْيَمُ أَنَّىٰ لَكِ هَٰذَا قَالَتْ هُوَ مِنْ عِندِ ٱللَّهِ إِنَّ ٱللَّهَ يَرْزُقُ مَن يَشَآءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ ٣٧
৩৮ ) এ অবস্থা দেখে যাকারিয়া তার রবের কাছে প্রার্থনা করলোঃ “হে আমার রব! তোমরা বিশেষ ক্ষমতা বলে আমাকে সৎ সন্তান দান করো। তুমিই প্রার্থনা শ্রবণকারী।” ৩৭ যখন তিনি মেহরাবে দাঁড়িয়ে নামায পড়ছিলেন
هُنَالِكَ دَعَا زَكَرِيَّا رَبَّهُۥ قَالَ رَبِّ هَبْ لِى مِن لَّدُنكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ ٱلدُّعَآءِ ٣٨
৩৯ ) তখন এর জবাবে তাকে ফেরেশতাগণ বললোঃ “আল্লাহ্‌ তোমাকে ইয়াহইয়ার ৩৮ সুসংবাদ দান করেছেন। সে আল্লাহ‌র পক্ষ থেকে একটি ফরমানের ৩৯ সত্যতা প্রমাণকারী হিসেবে আসবে। তার মধ্যে নেতৃত্ব ও সততার গুণাবলী থাকবে। সে পরিপূর্ণ সংযমী হবে, নবুওয়াতের অধিকারী হবে এবং সৎকর্মশীলদের মধ্যে গণ্য হবে।”
فَنَادَتْهُ ٱلْمَلَٰٓئِكَةُ وَهُوَ قَآئِمٌ يُصَلِّى فِى ٱلْمِحْرَابِ أَنَّ ٱللَّهَ يُبَشِّرُكَ بِيَحْيَىٰ مُصَدِّقًۢا بِكَلِمَةٍ مِّنَ ٱللَّهِ وَسَيِّدًا وَحَصُورًا وَنَبِيًّا مِّنَ ٱلصَّٰلِحِينَ ٣٩
৪০ ) যাকারিয়া বললোঃ “হে আমার রব! আমার সন্তান হবে কেমন করে? আমি তো বুড়ো হয়ে গেছি এবং আমার স্ত্রী তো বন্ধ্যা।” জবাব এলোঃ “এমনটিই হবে। ৪০ আল্লাহ্‌ যা চান তাই করেন।”
قَالَ رَبِّ أَنَّىٰ يَكُونُ لِى غُلَٰمٌ وَقَدْ بَلَغَنِىَ ٱلْكِبَرُ وَٱمْرَأَتِى عَاقِرٌ قَالَ كَذَٰلِكَ ٱللَّهُ يَفْعَلُ مَا يَشَآءُ ٤٠
২৮.
প্রথম ভাষণটি এখানেই শেষ হয়েছে। এর বিষয়বস্তু, বিশেষ করে এর মধ্যে বদর যুদ্ধের দিকে যে ইঙ্গিত করা হয়েছে, তার বর্ণনাভঙ্গি সম্পর্কে চিন্তা করলে এই ভাষণটি বদর যুদ্ধের পরে এবং ওহোদ যুদ্ধের আগে অর্থাৎ ৩ হিজরীতে নাযিল হয়েছিল বলে প্রবল ধারণা জন্মাবে। মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাকের বর্ণনা থেকে সাধারণ লোকদের এই ভুল ধারণা হয়েছে যে, এই সূরার প্রথম ৮টি আয়াত নাজরানের প্রতিনিধি দলের আগমনের সময় হিজরী ৯ সনে নাযিল হয়েছিল। কিন্তু প্রথমত এই ভূমিকা হিসেবে প্রদত্ত ভাষণটির বিষয়বস্তু পরিষ্কারভাবে একথা তুলে ধরেছে যে, এটি তার অনেক আগেই নাযিল হয়ে থাকবে। দ্বিতীয়ত, মুকাতিল ইবনে সুলাইমানের রেওয়ায়াতে একথা পরিষ্কার করে বলা হয়েছে যে, নাজরানের প্রতিনিধিদলের আগমনের সময় কেবলমাত্র হযরত ইয়াহ্‌ইয়া আল্লাইহিস সালাম ও হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের বর্ণনা সম্বলিত ৩০ টি বা তার চেয়ে কিছু বেশী আয়াত নাযিল হয়েছিল।
২৯.
এখান থেকে দ্বিতীয় ভাষণটি শুরু হচ্ছে। নবম হিজরী সনে নাজরানের খৃস্টীয় প্রজাতন্ত্রের প্রতিনিধি দল রসূলুল্লাহ্‌ ﷺ এর দরবারে হাযির হবার পর এ অংশটি নাযিল হয়েছিল। হিজায ও ইয়ামনের মাঝখানে নাজরান এলাকা অবস্থিত। সে সময় এ এলাকায় ৭২টি জনপদ ছিল। বলা হয়ে থাকে, এই জনপদগুলো থেকে সে সময় এক লাখ বিশ হাজার যুদ্ধ করার যোগ্যতা সম্পন্ন জওয়ান বের হয়ে আসতে পারতো। এলাকার সমগ্র অধিবাসীই ছিল খৃস্টান। তিনজন দলনেতার অধীনে তারা শাসিত হতো। একজনকে বলা হতোঃ আকেব। তিনি ছিলেন জাতীয় প্রধান। দ্বিতীয়জনকে বলা হতো সাইয়েদ। তিনি জাতির তামাদ্দুনিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলো দেখাশুনো করতেন। তৃতীয়জনকে বলা হতোঃ উসকুফ্ (বিশপ)। তিনি ছিলেন ধর্মীয় বিষয়ের ভারপ্রাপ্ত। নবী ﷺ এর মক্কা বিজয়ের পর যখন সমগ্র আরববাসীর মনে এ বিশ্বাস জন্মালো যে, দেশের ভবিষ্যৎ এখন মুহাম্মাদ ﷺ এর হাতে তখন আরবের বিভিন্ন এলাকা থেকে তার কাছে প্রতিনিধি দলের আগমন হতে লাগলো। এই সময় নাজরানের তিনজন দলনেতাও ৬০ জনের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে মদীনায় পৌঁছেন। তারা যুদ্ধ করতে প্রস্তুত ছিল না। তখন প্রশ্ন ছিল, তারা ইসলাম গ্রহণ করবে, না জিম্মী হয়ে থাকবে। এ সময় মহান আল্লাহ‌ নবী ﷺ এর ওপর এ ভাষণটি নাযিল করেন। এর মাধ্যমে নাজরানের প্রতিনিধি দলের সামনে ইসলামের দাওয়াত পেশ করার ব্যবস্থা করা হয়।
৩০.
ইমরান ছিল হযরত মূসা ও হারুনের পিতার নাম। বাইবেলে তাঁকে “আমরাম” বলা হয়েছে।
৩১.
খৃস্টানদের ভ্রষ্টতার প্রধানতম কারণ এই যে, তারা হযরত ঈসাকে (আঃ) আল্লাহ‌র বান্দা ও নবী হবার পরিবর্তে তাঁকে আল্লাহ‌র পুত্র ও আল্লাহ‌র কর্তৃত্বে অংশীদার গণ্য করে। তাদের বিশ্বাসের এই মৌলিক গলদটি দূর করতে পারলে সঠিক ও নির্ভুল ইসলামের দিকে তাদের ফিরিয়ে আনা অনেক সহজ হয়ে যায়। তাই এই ভাষণের ভূমিকা এভাবে ফাঁদা হয়েছেঃ আদম, নূহ, ইবরাহীমের বংশের ও ইমরানের বংশের সকল নবীই ছিলেন মানুষ। একজনের বংশে আর একজনের জন্ম হয়েছে। তাদের কেউ খোদা ছিলেন না। তাদের বৈশিষ্ট্য ছিল এই যে, আল্লাহ‌ তাঁর দ্বীনের প্রচার ও দুনিয়াবাসীর সংশোধনের জন্য তাদেরকে মনোনীত করেছিলেন।
৩২.
‘ইমরানের মহিলা’ শব্দের অর্থ এখানে যদি ইমরানের স্ত্রী ধরা হয়, তাহলে বুঝতে হবে এখানে সেই ইমরানের কথা বলা হয়নি যার প্রসঙ্গে ইতিপূর্বে উল্লেখিত হয়েছে। বরং ইনি ছিলেন হযরত মারয়ামের (আঃ) পিতা। সম্ভবত এ নাম ছিল ইমরান। আর ‘ইমরানের মহিলা’ শব্দের অর্থ যদি ধরা হয় ইমরান বংশের মহিলা, তাহলে হযরত মারয়ামের (আঃ) মা ইমরান বংশের মেয়ে ছিলেন একথাই বুঝতে হবে। কিন্তু এই দু’টি অর্থের মধ্য থেকে কোন একটিকে চূড়ান্তভাবে অগ্রাধিকার দেবার জন্য কোন তথ্য মাধ্যম আমাদের হাতে নেই। কারণ হযরত মারয়ামের পিতা কে ছিলেন এবং তাঁর মাতা ছিলেন কোনো বংশের মেয়ে-এ বিষয়ে ইতিহাসে কোন উল্লেখ নেই। তবে হযরত ইয়াহ্‌ইয়ার মাতা ও হযরত মারয়ামের মাতা পরস্পর আত্মীয় ছিলেন, এই বর্ণনাটি যদি সঠিক বলে মেনে নেয়া হয়, তাহলে ইমরান বংশের মেয়ে-ই হবে “ইমরানের মহিলা” শব্দের সঠিক অর্থ। কারণ লুক লিখিত ইঞ্জিলে আমরা সুস্পষ্টভাবে পাই যে, হযরত ইয়াহ্‌ইয়ার মাতা হযরত হারুনের বংশধর ছিলেন। (লুকঃ ৫)
৩৩.
অর্থাৎ তুমি নিজের বান্দাদের প্রার্থনা শুনে থাকো এবং তাদের মনের অবস্থা জানো।
৩৪.
অর্থাৎ মেয়েরা এমন অনেক প্রাকৃতিক দুর্বলতা ও তামাদ্দুনিক বিধি-নিষেধের আওতাধীন থাকে, যেগুলো থেকে ছেলেরা থাকে মুক্ত। কাজেই ছেলে জন্ম নিলে আমি যে উদ্দেশ্যে নিজের সন্তান তোমার পথে উৎসর্গ করতে চেয়েছিলাম, তা ভালোভাবে পূর্ণ হতো।
৩৫.
এখান থেকে সেই সময়ের আলোচনা শুরু হয়েছে যখন হযরত মারয়াম প্রাপ্ত বয়স্কা হলেন, তাঁকে বাইতুল মাকদিসের ইবাদাতগাহে (হাইকেল) পৌঁছিয়ে দেয়া হলো এবং সেখানে তিনি দিন-রাত আল্লাহ‌র যিকিরে মশগুল হয়ে গেলেন। শিক্ষা ও অনুশীলন দানের জন্য তাকে হযরত যাকারিয়ার অভিভাবকত্বে সোপর্দ করা হয়েছিল। আত্মীয়তার সম্পর্কের দিক দিয়ে সম্ভবত হযরত যাকারিয়া ছিলেন তার খালু। তিনি হাইকেলের অন্যতম পুরোহিত ছিলেন। এখানে সেই যাকারিয়া নবীর কথা বলা হয়নি। যাকে হত্যা করার ঘটনা বাইবেলের ওল্‌ড টেস্টামেন্টে উল্লেখিত হয়েছে।
৩৬.
মেহরাব শব্দটি বলার সাথে সাথে লোকদের দৃষ্টি সাধারণত আমাদের দেশে মসজিদে ইমামের দাঁড়াবার জন্য যে জায়গাটি তৈরী করা হয় সেদিকে চলে যায়। কিন্তু এখানে মেহরাব বলতে সে জায়গাটি বুঝানো হয় নি। খৃস্টান ও ইহুদীদের গীর্জা ও উপাসনালয়গুলোতে মূল উপাসনা গৃহের সাথে লাগোয়া ভূমি সমতল থেকে যথেষ্ট উঁচুতে যে কক্ষটি তৈরী করা হয়, যার মধ্যে উপাসনালয়ের খাদেম, পুরোহিত এতেকাফকারীরা অবস্থান করে, তাকে মেহরাব বলা হয়। এই ধরনের একটি কামরায় হযরত মারয়াম এতেকাফ করছিলেন।
৩৭.
হযরত যাকারিয়া (আঃ) সে সময় পর্যন্ত নিঃসন্তান ছিলেন। এই যুবতী পুণ্যবতী মেয়েটিকে দেখে স্বভাবতই তার মনে এ আকাংখা জন্ম নিলঃ আহা, যদি আল্লাহ‌ আমাকেও এমনি একটি সৎসন্তান দান করতেন। আর আল্লাহ‌ তার অসীম কুদরাতের মাধ্যমে যেভাবে এই সংসার ত্যাগী, নিঃসঙ্গ, কক্ষবাসিনী মেয়েটিকে আহার যোগাচ্ছেন। তা দেখে তার মনে আশা জাগে যে, আল্লাহ‌ চাইলে এই বৃদ্ধ বয়সেও তাকে সন্তান দিতে পারেন।
৩৮.
বাইবেলে এর নাম লিখিত হয়েছে, খৃস্ট ধর্মে দীক্ষাদাতা-জোন (John the baptist)। তাঁর অবস্থা জানার জন্য দেখুন, মথিঃ ৩, ১১, ১৪ অধ্যায়; মার্কঃ ১, ৬ অধ্যায় এবং লুকঃ ১, ৩ অধ্যায়।
৩৯.
আল্লাহ্‌র ‘ফরমান’ বলতে এখানে হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে বুঝানো হয়েছে। যেহেতু তাঁর জন্ম হয়েছিল মহান আল্লাহ‌র একটি অস্বাভাবিক ফরমানের মাধ্যমে অলৌকিক বিষয় হিসেবে, তাই কুরআন মজীদে তাঁকে “কালেমাতুম মিনাল্লাহু” বা আল্লাহ‌র ফরমান বলা হয়েছে।
৪০.
অর্থাৎ তোমার বার্ধক্য ও তোমার স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব সত্ত্বেও আল্লাহ‌ তোমাকে পুত্র সন্তান দান করবেন।
অনুবাদ: