আয়াত
৭১ ) অথচ তাদের পূর্বে বহু লোক পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছিল
وَلَقَدْ ضَلَّ قَبْلَهُمْ أَكْثَرُ ٱلْأَوَّلِينَ ٧١
৭২ ) এবং তাদের মধ্যে আমি সতর্ককারী রসূল পাঠিয়েছিলাম।
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا فِيهِم مُّنذِرِينَ ٧٢
৭৩ ) এখন দেখো সে সতর্ককৃত লোকদের কি পরিণাম হয়েছিল।
فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُنذَرِينَ ٧٣
৭৪ ) এ অশুভ পরিণতির হাত থেকে কেবলমাত্র আল্লাহর সে বান্দারাই রেহাই পেয়েছে যাদেরকে তিনি নিজের জন্য স্বতন্ত্র করে নিয়েছেন।
إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ ٧٤
৭৫ ) (ইতিপূর্বে) ৩৯ নূহ আমাকে ডেকেছিল, ৪০ তাহলে দেখো, আমি ছিলাম কত ভালো জওয়াবদাতা।
وَلَقَدْ نَادَىٰنَا نُوحٌ فَلَنِعْمَ ٱلْمُجِيبُونَ ٧٥
৭৬ ) আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে উদ্ধার করি ভয়াবহ যন্ত্রণা থেকে, ৪১
وَنَجَّيْنَٰهُ وَأَهْلَهُۥ مِنَ ٱلْكَرْبِ ٱلْعَظِيمِ ٧٦
৭৭ ) শুধু তাঁর বংশধরদেরকেই টিকিয়ে রাখি ৪২
وَجَعَلْنَا ذُرِّيَّتَهُۥ هُمُ ٱلْبَاقِينَ ٧٧
৭৮ ) এবং পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে তাঁরই প্রশংসা ছেড়ে দেই।
وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِى ٱلْءَاخِرِينَ ٧٨
৭৯ ) সমগ্র বিশ্ববাসীর মধ্যে নূহের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। ৪৩
سَلَٰمٌ عَلَىٰ نُوحٍ فِى ٱلْعَٰلَمِينَ ٧٩
৮০ ) সৎকর্মশীলদেরকে আমি এমনই প্রতিদান দিয়ে থাকি।
إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ ٨٠
৩৯.
এ বিষয়বস্তুটির সম্পর্ক রয়েছে পেছনের রুকূ’র শেষ বাক্যগুলোর সাথে। সেগুলোর ওপর চিন্তা-ভাবনা করলে এ কাহিনীটি এখানে কেন শুনানো হচ্ছে তা বুঝা যায়।
৪০.
এখানে হযরত নূহ আলাইহিস সালামের ফরিয়াদের কথা বলা হয়েছে। দীর্ঘকাল নিজের কওমকে সত্য দ্বীনের দাওয়াত দেবার পর শেষে হতাশ হয়ে তিনি মহান আল্লাহর কাছে এ ফরিয়াদ করেছিলেন। সূরা কামারে এ ফরিয়াদের শব্দগুলো নিম্নোক্তভাবে এসেছে فَدَعَا رَبَّهُ أَنِّي مَغْلُوبٌ فَانْتَصِرْ “সে তার রবকে ডেকে বললো, আমি পরাজিত হয়ে গেছি, তুমি আমাকে সাহায্য করো।” (আল কামার, ১০ আয়াত)
৪১.
অর্থাৎ একটি চরিত্রহীন ও জালেম জাতির ক্রমাগত বিরোধিতার কারণে তিনিই যে ভয়াবহ যন্ত্রণা, ক্লেশ ও কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছিলেন। এর মধ্যে এ বিষয়টির প্রতিও একটি সূক্ষ্ম ইঙ্গিত রযেছে যে, নূহ আলাইহিস সালাম ও তাঁর সাথিদেরকে যেভাবে সেই মহাক্লেশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, ঠিক তেমনি শেষ পর্যন্ত আমি মুহাম্মাদ ﷺ ও তাঁর সঙ্গী-সাথিদেরকেও মক্কাবাসীরা যে মহাক্লেশের মধ্যে নিক্ষেপ করেছে তা থেকে উদ্ধার করবো।
৪২.
এর দু’টি অর্থ হতে পারে। এক, যারা হযরত নূহের বিরোধিতা করেছিল তাদের বংশধারা দুনিয়ার বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে এবং হযরত নূহেরই বংশধারাকে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। দুই, সমস্ত মানব বংশধারাকে খতম করে দেয়া হয়েছে এবং সামনের দিকে কেবলমাত্র নূহ আলাইহিস সালামের সন্তানদের মাধ্যমে এ দুনিয়ার জনবসতিকে বিস্তৃতি দান করা হয়েছে। সাধারণভাবে মুফসসিরগণ এ দ্বিতীয় অর্থটিই গ্রহণ করেছেন। কিন্তু কুরআন মজীদের শব্দবলী এ অর্থটির ব্যাপারে সুস্পষ্ট নয়। আসল ব্যাপারটা কি তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
৪৩.
অর্থাৎ আজ সারা দুনিয়ায় হযরত নূহের দুর্নাম করার কেউ নেই। নূহের প্লাবনের পর থেকে আজ পর্যন্ত হাজার হাজার বছর ধরে দুনিয়াবাসীরা তাঁর সুনামই করে চলেছে।