وَلَن تَسْتَطِيعُوٓا۟ أَن تَعْدِلُوا۟ بَيْنَ ٱلنِّسَآءِ وَلَوْ حَرَصْتُمْ ۖ فَلَا تَمِيلُوا۟ كُلَّ ٱلْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَٱلْمُعَلَّقَةِ ۚ وَإِن تُصْلِحُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورًۭا رَّحِيمًۭا
স্ত্রীদের মধ্যে পুরোপুরি ইনসাফ করা তোমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তোমরা চাইলেও এ ক্ষমতা তোমাদের নেই। কাজেই (আল্লাহর বিধানের উদ্দেশ্য পূর্ণ করার জন্য এটিই যথেষ্ট যে, ) এক স্ত্রীকে একদিকে ঝুলিয়ে রেখে অন্য স্ত্রীর প্রতি ঝুঁকে পড়বে না। ১৬১ যদি তোমরা নিজেদের কর্মনীতির সংশোধন করো এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকো, তাহলে আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়। ১৬২
১৬১
এর অর্থ হচ্ছে, মানুষ সব অবস্থায় একাধিক স্ত্রীদের মধ্যে সব দিক দিয়ে পূর্ণ সাম্য কায়েম করতে পারে না। একটি স্ত্রী সুন্দরী রুপসী এবং অন্যটি কুৎসিত। একজন যুবতী এবং অন্যজন বিগত যৌবনা। একজন চির রুগ্না ও অন্যজন সবল স্বাস্থ্যবতী। একজন কর্কশ স্বভাবের ও কটূভাষিণী এবং অন্যজন মধুর প্রকৃতির ও মিষ্টভাষিণী। স্ত্রীদের মধ্যে এ ধরনের আরো বিভিন্ন প্রকৃতিগত পার্থক্য থাকতে পারে। এর ফলে স্বভাবতই এক স্ত্রীর প্রতি আকর্ষণ বেশী ও অন্য স্ত্রীর প্রতি কম হতে পারে। এহেন অবস্থায় আইন এ দাবী করে না যে, ভালোবাসা, আকর্ষণ ও দৈহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উভয়ের মধ্যে পরিপূর্ণ সমতা কায়েম রাখা অপরিহার্য। বরং আইন কেবল এতটুকু দাবী করে, যখন তুমি আকর্ষণহীনতা সত্ত্বেও একটি মেয়েকে তালাক দিচ্ছো না এবং নিজে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে বা তার কামনা অনুযায়ী তাকে নিজের স্ত্রীর মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত রাখছো, তখন তার সাথে অবশ্যি এতটুকু সম্পর্ক রাখো যার ফলে সে কার্যত স্বামীহীনা হয়ে না পড়ে। এ অবস্থায় এক স্ত্রীর তুলনায় অন্য স্ত্রীর প্রতি বেশী ঝুকে পড়া ও তার প্রতিবেশী অনুরক্ত হওয়া একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু অন্য স্ত্রীর প্রতি যেন এমনভাবে অবহেলা ও অনীহা প্রদর্শিত না হয় যার ফলে মনে হতে থাকে যে, তার কোন স্বামীই নেই।
এ আয়াত থেকে কেউ কেউ এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, কুরআন একদিকে আদলের শর্ত সহকারে একাধিক বিয়ের অনুমতি দেয় আবার অন্যদিকে আদলকে অসম্ভব গণ্য করে এই অনুমতিকে কার্যত বাতিল করে দেয়। কিন্তু আসলে এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন অবকাশই এ আয়াতে নেই। কুরআন যদি কেবল এতটুকু বলেই ক্ষান্ত হতো যে, “তোমরা স্ত্রীদের মধ্যে আদল কায়েম করতে পারবে না,” তাহলে উপরোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সুযোগ থাকতো। কিন্তু এর পরপরই বলা হয়েছে, “কাজেই এক স্ত্রীর প্রতি সম্পূর্ণরুপে ঝুঁকে পড়ো না।” এ বাক্যটি উপরোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন সুযোগই এখানে রাখেনি। খৃস্টবাদী ইউরোপের কিছু নকলনবিশ এ ব্যাপারে নিতান্ত উদ্ভট সিদ্ধান্তই গ্রহণ করেছেন।
১৬২
অর্থাৎ যদি তোমরা যথাসম্ভব ইচ্ছা করে জুলুম না করো এবং ইনসাফ ও ন্যায়নিষ্ঠার পরিচয় দিতে থাকো, তাহলে স্বাভাবিক অক্ষমতার কারণে ইনসাফ ও ন্যায়নীতির ব্যাপারে সামান্য যা ভুলচুক তোমরা করবে আল্লাহ তা মা’ফ করে দেবেন।