وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ مَعَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ ٱلنَّبِيِّـۧنَ وَٱلصِّدِّيقِينَ وَٱلشُّهَدَآءِ وَٱلصَّـٰلِحِينَ ۚ وَحَسُنَ أُو۟لَـٰٓئِكَ رَفِيقًۭا
যে ব্যক্তি আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্য করবে সে তাদের সহযোগী হবে, যাদেরকে আল্লাহ পুরস্কৃত করেছেন নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীলদের মধ্য থেকে। ৯৯ মানুষ যাদের সঙ্গ লাভ করতে পারে তাদের মধ্যে এরা কতই না চমৎকার সঙ্গী। ১০০
৯৯
সিদ্দীক বলতে এমন ব্যক্তিকে বুঝায় যে পরম সত্যনিষ্ঠ ও সত্যবাদী। তার মধ্যে সততা ও সত্যপ্রিয়তা পূর্ণমাত্রায় বিরাজিত থাকে। নিজের আচার-আচরণ ও লেনদেনে সে হামেশা সুস্পষ্ট ও সরল সোজা পথ অবলম্বন করে। সে সবসময় সাচ্চা দিলে হক ও ইনসাফের সহযোগী হয়। সত্য ও ন্যায়নীতি বিরোধী যে কোন বিষয়ের বিরুদ্ধে সে পর্বত সমান অটল অস্তিত্ব নিয়ে রুখে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে সামান্যতম দুর্বলতাও দেখায় না। সে এমনই পবিত্র ও নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী হয় যে, তার আত্মীয়-অনাত্মীয়, বন্ধু-শত্রু, আপন-পর কেউই তার কাছ থেকে নির্লজ্জ ও নিখাদ সত্যপ্রীতি, সত্য-সমর্থন ও সত্য-সহযোগীতা ছাড়া আর কিছুরইআশঙ্কা করে না।
শহীদ শব্দের আসল অর্থ হচ্ছে সাক্ষী। শহীদ বলতে এমন ব্যক্তি বুঝায় যে নিজের জীবনের সমগ্র কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তার ঈমানের সত্যতার সাক্ষ্য প্রদান করে। আল্লাহর পথে লড়াই করে প্রাণ উৎসর্গকারীকেও এ কারণেই শহীদ বলা হয় যে, সে প্রাণ উৎসর্গ করে একথা প্রমাণ করে দেয় যে, সে যে জিনিসের ওপর ঈমান এনেছিল তাকে যথার্থই সাচ্চা দিলে সত্য মনে করতো এবং তা তার কাছে এত বেশী প্রিয় ছিল যে, তার জন্য নিজের প্রাণ অকাতরে বিলিয়ে দিতেও দ্বিধা করেনি। আবার এমন ধরনের সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তিদেরকেও শহীদ বলা হয় যারা এতই নির্ভরযোগ্য হয় যে, তারা কোন বিষয়ে সাক্ষ্য দিলে তাকে নির্দ্বিধায় সত্য ও সঠিক বলে স্বীকার করে নেয়া হয়।
সালেহ বা সৎকর্মশীল বলতে এমন ব্যক্তি বুঝায় যে তার নিজের চিন্তাধারা, আকীদা-বিশ্বাস, ইচ্ছা, সংকল্প, কথা ও কর্মের মাধ্যমে সত্য-সরল পথে প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং এই সঙ্গে নিজের জীবনে সৎ ও সুনীতি অবলম্বন করে।
১০০
অর্থাৎ দুনিয়ায় যারা এ ধরনের লোকদের সঙ্গ লাভ করে এবং আখেরাতেও এদের সাথী হয় তারা বড়ই সৌভাগ্যবান। অবশ্যিকোন ব্যক্তির অনুভূতি মরে গেলে ভিন্ন কথা, নয়তো অসৎ ও দুশ্চরিত্র লোকদের সাথে দুনিয়ায় জীবন যাপন করা আসলে একটি ভয়াবহ শাস্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। আর আখেরাতে তারা যে পরিণামের সম্মুখীন হবে সেই একই পরিণামের ভাগী হয়ে আখেরাতে তাদের সাথী হওয়ার শাস্তি তো তুলনাবিহীন। তাই তো আল্লাহর নেক্কার বান্দারা হামেশা এই আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে যে, তারা যেন নেক লোকদের সমাজে বসবাস করতে পারে এবং মৃত্যুর পরও যেন তাদেরই সাথে থাকে।