أَمْ لَهُمْ شُرَكَـٰٓؤُا۟ شَرَعُوا۟ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمْ يَأْذَنۢ بِهِ ٱللَّهُ ۚ وَلَوْلَا كَلِمَةُ ٱلْفَصْلِ لَقُضِىَ بَيْنَهُمْ ۗ وَإِنَّ ٱلظَّـٰلِمِينَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ
এসব লোক কি আল্লাহর এমন কোন শরীকে বিশ্বাস করে যে এদের জন্য দ্বীনের মত এমন একটি পদ্ধতি নির্ধারিত করে দিয়েছে আল্লাহ যার অনুমোদন দেননি? ৩৮ যদি ফায়সালার বিষয়টি পূর্বেই মীমাংসিত হয়ে না থাকতো তাহলে তাদের বিবাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয়া হতো। ৩৯ এ জালেমদের জন্য নিশ্চিত কষ্টদায়ক শাস্তি রয়েছে।
৩৮
একথা সুস্পষ্ট যে এ আয়াতে شُرَكَاءُ অর্থে সেই সব শরীক বুঝানো হয়নি মানুষ যাদের কাছে প্রার্থনা করে বা যাদেরকে নযর-নিয়াজ দেয় কিংবা যাদের সামনে পূজা অর্চনার অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করা হয়। বরং নিশ্চিতভাবে সেই সব মানুষকে বুঝানো হয়েছে মানুষ যাদেরকে আদেশ দানের ক্ষেত্রে অংশীদার বানিয়ে নিয়েছে, যাদের শেখানো ধ্যান-ধারণা, আকীদা-বিশ্বাস, মতবাদ এবং দর্শনের প্রতি মানুষ বিশ্বাস পোষণ করে, যাদের দেয়া মূল্যবোধ মেনে চলে, যাদের পেশকৃত নৈতিক নীতিমালা এবং সভ্যতা ও সংস্কৃতির মানদণ্ডসমূহ গ্রহণ করে, যাদের রচিত আইন-কানুন, পন্থা ও বিধি-বিধানকে নিজেদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও ইবাদতসমূহে, ব্যক্তি জীবনে, সমাজে, সভ্যতায়, কায়কারবার ও লেনদেনে, বিচারালয়সমূহে এবং নিজেদের রাজনীতি ও সরকার ব্যবস্থায় এমনভাবে গ্রহণ করে যেন এটাই সেই শরীয়ত যার অনুসরণ তাদের করা উচিত। এটা যেন বিশ্ব-জাহানের রব আল্লাহর রচিত আইনের পরিপন্থী একটা পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা এবং তাঁর অনুমোদন ছাড়াই উদ্ভাবকরা উদ্ভাবন করেছে এবং মান্যকারীরা মেনে নিয়েছে। আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করা এবং অন্য কারো কাছে প্রার্থনা করা যেমন শিরক এটাও ঠিক তেমনি শিরক। (অধিক ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা বাকারা, আয়াত ১-৭২, টীকা ১৭০, আয়াত ২৫৬, টীকা ২৮৬; আল ইমরান আয়াত ৬৪ ও ৬৫, টীকা ৫৭ ও ৫৮, আয়াত ৭৫ থেকে ৭৭, টীকা ৬৪, ৬৫ ; আন নিসা, আয়াত ৬০, টীকা ৯০; আল মায়েদা, আয়াত ১ ও ২ টীকাসহ, আয়াত ৮৭ ও ৮৮ টীকাসহ; আন-আম, আয়াত ১১৯ থেকে ১২১, টীকাসহ, আয়াত ১৩৬, ১৩৭ টীকাসহ; আত তাওবা, আয়াত ৩১ টীকাসহ; ইউনুস আয়াত ৫৯, ৬০ টীকাসহ; ইবরাহীম, আয়াত ২২ টীকাসহ; মারয়াম, আয়াত ৪২ টীকাসহ; আল-কাসাস, আয়াত ৬২, ৬৩ টীকাসহ; সাবা আয়াত ৪১ টীকা ৬৩; ইয়সীন, আয়াত ৬০, টীকা ৫৩)।
৩৯
অর্থাৎ এটা আল্লাহর বিরুদ্ধে এমন এক ধৃষ্টতা যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ব্যাপারটি যদি কিয়ামত পর্যন্ত সময়ের জন্য মুলতবী করা না হতো তাহলে আল্লাহর বান্দা হয়ে যারা আল্লাহর পৃথিবীতে নিজেদের রচিত ‘দ্বীন’ চালু করেছে তাদের প্রত্যেকের ওপর আযাব নাযিল করা হতো এবং তাদেরকেও ধ্বংস করে দেয়া হতো যারা আল্লাহর দ্বীন পরিত্যাগ করে অন্যদের রচিত দ্বীন গ্রহণ করেছে।