وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَءَامَنُوا۟ بِمَا نُزِّلَ عَلَىٰ مُحَمَّدٍۢ وَهُوَ ٱلْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ ۙ كَفَّرَ عَنْهُمْ سَيِّـَٔاتِهِمْ وَأَصْلَحَ بَالَهُمْ
আর যারা ঈমান এনেছে নেক কাজ করেছে এবং মুহাম্মদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে ৪ তা মেনে নিয়েছে- বস্তুত তা তো তাদের রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত অকাট্য সত্য কথা- আল্লাহ তাদের খারাপ কাজগুলো তাদের থেকে দূর করে দিয়েছেন ৫ এবং তাদের অবস্থা শুধরে দিয়েছেন। ৬
৪
الَّذِينَ آمَنُوا বলার পর
آمَنُوا بِمَا نُزِّلَ عَلَى مُحَمَّدٍ বলার প্রয়োজন আর থাকে না। কেননা, ঈমান আনয়ন করার মধ্যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি নাযিলকৃত শিক্ষাসমূহের প্রতি ঈমান পোষণ করা আপনা থেকেই অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু তা সত্ত্বেও আলাদাভাবে বিশেষ করে এর উল্লেখ করা হয়েছে এ জন্য যে, নবী হিসেবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠানোর পর কোন ব্যক্তি যতক্ষণ না তাঁকে এবং তাঁর আনিত শিক্ষাসমূহকে মেনে না নেবে ততক্ষণ আল্লাহ, আখেরাত, পূর্ববর্তী নবী-রাসূল ও পূর্ববর্তী কিতাবসমূহ সে যতই মেনে চলুক না কেন তা তার জন্য কল্যাণকর হবে না। একথাটা স্পষ্টভাবে বলা জরুরী ছিল। কারণ, হিজরতের পরে মদীনায় এমন সব লোকের সাথে আদান-প্রদান ও উঠাবসা করতে হচ্ছিলো যারা ঈমানের আর সব আবশ্যকীয় বিষয় মানলেও হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাত মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিলো।
৫
এর দু’টি অর্থঃ একটি হচ্ছে, তাদের দ্বারা জাহেলী যুগে যে গোনাহর কাজ সংঘটিত হয়েছিল আল্লাহ তাদের হিসেব থেকে বাদ দিয়েছেন। ঐ সব গোনাহর কাজের জন্য এখন আর তাদের কোন প্রকার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না। আরেকটি অর্থ হচ্ছে, আকীদা, বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণা, নৈতিক চরিত্র এবং কাজ-কর্মের যে পঙ্কিলতার মধ্যে তরা ডুবে ছিল আল্লাহ তা’আলা তা থেকে তাদেরকে মুক্ত করেছেন। এখন তাদের মন-মস্তিষ্ক পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে। তাদের অভ্যাস ও আচার-আচরণ পরিবর্তিত হয়েছে এবং তাদের জীবন, চরিত্র ও কর্মকাণ্ডও পরিবর্তিত হয়েছে। এখন তাদের মধ্যে জাহেলিয়াতের পরিবর্তে আছে ঈমান এবং দুষ্কৃতির পরিবর্তে আছে সুকৃতি।
৬
একথাটিরও দুটি অর্থ। একটি অর্থ হচ্ছে, অতীতের অবস্থা পরিবর্তিত করে আল্লাহ তাদেরকে ভবিষ্যতের জন্য সঠিক পথে নিয়ে এসেছেন এবং তাদের জীবনকে সুবিন্যস্ত ও সুসজ্জিত করে দিয়েছেন। আরেকটি অর্থ হচ্ছে, এখন পর্যন্ত তারা যে দুর্বল, অসহায় ও নির্যাতিত অবস্থার মধ্যে ছিল তা থেকে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে বের করে এনেছেন। এখন তিনি তাদের জন্য এমন অবস্থা সৃষ্টি করে দিয়েছেন যে, তারা জুলুমের শিকার হওয়ার পরিবর্তে জালেমের মোকাবিলা করবে, শাসিত হওয়ার পরিবর্তে নিজেরাই স্বাধীনভাবে নিজেদের জীবন পরিচালনা করবে এবং বিজিত না হয়ে বিজয়ী হয়ে থাকবে।