"পরে মূসা আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করিয়ে দেয়ার জন্য লোকদেরকে শিবির থেকে বাইরে আনলেন। আর তারা পর্বতের তলায় দাঁড়ালো। তখন সমস্ত সিনাই পর্বত ওপর থেকে নীচে পর্যন্ত ধোঁয়ায় পরিপূর্ণ হয়ে গেল। কারণ মহান আল্লাহ অগ্নিশিখার মধ্য দিয়ে তার ওপর নেমে এলেন। আর ভাঁটির ধোঁয়ার মত ধোঁয়া ওপরে উঠছিল এবং গোটা পর্বত ভীষণভাবে কাঁপছিল।” (যাত্র পুস্তক ১৯: ১৭-১৮)
এভাবে আল্লাহ কিতাবের বিধান মেনে চলার জন্য বনী ইসরাঈলীদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নেন। এ অঙ্গীকার নিতে গিয়ে বাইরে তাদের জন্য একটি বিশেষ পরিবেশ সৃষ্টি করেন, যাতে আল্লাহর প্রতাপ-প্রতিপত্তি, তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব এবং এ অঙ্গীকারের গুরুত্ব তাদের মনে পুরোপুরি অনুভূত হয় এবং বিশ্বজাহানের সার্বভৌম ক্ষমতার একচ্ছত্র অধিকারী শাহেনশাহের সাথে অঙ্গীকার ও চুক্তি সম্পাদন করাকে তারা যেন মামুলি ব্যাপার মনে করতে না পারে। এ থেকে এ ধারণা করা ঠিক হবে না যে, তারা আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করতে প্রস্তুত ছিল না, ভয় দেখিয়ে জোর জবরদস্তি করে তাদেরকে অঙ্গীকারাব্ধ হতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। আসল ব্যাপার হচ্ছে, তারা সবাই ছিল মু’মিন। সিনাই পাহাড়ের পাদদেশে তারা গিয়েছিল অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে। কিন্তু আল্লাহ তাদের সাথে মামুলীভাবে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হবার পরিবর্তে এ অঙ্গীকারের অনুভূতি তাদের মনে ভালভাবে বদ্ধমূল করার চেষ্টা করেন। অঙ্গীকার করার সময় কোন মহাশক্তিধর সত্তার সাথে তারা অংগীকার করছে এবং তাঁর সাথে অঙ্গীকার ভঙ্গ করার পরিণাম কি হতে পারে, তা যেন তারা অনুভব করতে পারবে, এটাই ছিল আল্লাহর অভিপ্রায়।
এখানে এসে বনী ইসরাঈল জাতিকে সম্বোধনের পালা শেষ হয়ে যায়। পরবর্তী রুকূ'গুলোতে সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে বক্তব্য পেশ করা হয়েছে। বিশেষ করে নবী ﷺ যাদেরকে সরাসরি ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছিলেন, তাদেরকে লক্ষ্য করে বক্তব্য রাখা হয়েছে।