আয়াত
১১ ) অথচ তাদেরকে পরস্পরে দৃষ্টি সীমার মধ্যে রাখা হবে। ১১ অপরাধী সেদিনের আযাব থেকে মুক্তির বিনিময়ে তার সন্তান-সন্ততিকে,
يُبَصَّرُونَهُمْ يَوَدُّ ٱلْمُجْرِمُ لَوْ يَفْتَدِى مِنْ عَذَابِ يَوْمِئِذٍۭ بِبَنِيهِ ١١
১২ ) স্ত্রীকে, ভাইকে এবং
وَصَٰحِبَتِهِۦ وَأَخِيهِ ١٢
১৩ ) তাকে আশ্রয়দানকারী জ্ঞাতি-গোষ্ঠীর আপনজনকে
وَفَصِيلَتِهِ ٱلَّتِى تُـْٔوِيهِ ١٣
১৪ ) এমনকি, পৃথিবীর সবকিছুই দিতে চাইবে।
وَمَن فِى ٱلْأَرْضِ جَمِيعًا ثُمَّ يُنجِيهِ ١٤
১৫ ) কখনো নয়, তা তো হবে জলন্ত আগুনের লেলিহান শিখা
كَلَّآ إِنَّهَا لَظَىٰ ١٥
১৬ ) যা শরীরের গোশত ও চামড়া ঝলসিয়ে নিঃশেষ করে দেবে।
نَزَّاعَةً لِّلشَّوَىٰ ١٦
১৭ ) তাদেরকে সে অগ্নিশিখা উচ্চ স্বরে নিজের কাছে ডাকবে, যারা সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিল
تَدْعُوا۟ مَنْ أَدْبَرَ وَتَوَلَّىٰ ١٧
১৮ ) আর সম্পদ জমা করে ডিমে তা দেয়ার মত করে আগলে রেখেছিল ১২
وَجَمَعَ فَأَوْعَىٰٓ ١٨
১৯ ) মানুষকে ছোট মনের অধিকারী করে সৃষ্টি করা হয়েছে। ১৩
إِنَّ ٱلْإِنسَٰنَ خُلِقَ هَلُوعًا ١٩
২০ ) বিপদ-মুসিবতে পড়লেই সে ঘাবড়ে যায়,
إِذَا مَسَّهُ ٱلشَّرُّ جَزُوعًا ٢٠
১১.
অর্থাৎ তারা একজন আরেকজনকে দেখতে পাবে না বলে জিজ্ঞেস করবে না তা নয়।   বরং অন্যের ব্যাপারে যা ঘটেছে তা প্রত্যেকেই নিজ চোখে দেখতে পাবে।  কিন্তু তা সত্ত্বেও সে তাকে জিজ্ঞেস করবে না।  কেননা, সে তখন নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকবে।
১২ .
এ স্থানে ও আখেরাতের মানুষের মন্দ পরিণামের দু’টি কারণ বলা হয়েছে যা সূরা আল হাক্কার ৩৩ও ৩৪ আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। একটি হলো হক থেকে ফিরে যাওয়া এবং ঈমান আনয়নের অস্বীকৃতি। অপরটি হলো দুনিয়া পূজা ও কৃপণতা। এ কারণেই মানুষ সম্পদ জমা করে এবং কোন কল্যাণকর কাজের জন্য তা খরচ করে না।
১৩.
যে বিষয়টিকে আমরা আমাদের ভাষায় এভাবে বলে থাকি, “এটি মানুষের প্রকৃতিগত অথবা এটা তার সহজাত দুর্বলতা” সে বিষয়টিকে আল্লাহ এভাবে বর্ণনা করেন যে, “মানুষকে সৃষ্টিই করা হয়েছে এভাবে।” এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার যে, কুরআন মজীদের বহু জায়গায় মানব জাতির সাধারণ নৈতিক দুর্বলতা উল্লেখ করার পর ঈমান ও সত্যের পথ অনুসরণকারীদের তা থেকে ব্যতিক্রম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তী আয়াতে এ বিষয়টিই বর্ণনা করা হয়েছে। এভাবে এ সত্যটি আপনা থেকেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, মানুষের জন্মগত এসব দুর্বলতা অপরিবর্তনীয় নয়।  বরং আল্লাহর দেয়া হিদায়াত গ্রহণ করে মানুষ যদি আত্মশুদ্ধির জন্য সত্যিকার প্রচেষ্টা চালায় তাহলে সে এসব দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারে। পক্ষান্তরে যদি সে তার প্রবৃত্তিকে লাগামহীনভাবে ছেড়ে দেয় তাহলে দূর্বলতাগুলো তার মধ্যে দৃঢ়মূল হয়ে যায়।  (আরো ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, সূরা আম্বিয়া, টীকা ৪১;সূরা আয যুমার, টীকা ২৩ থেকে ২৮ এবং সূরা আশ শূরা, টীকা ৭৫)