وَٱذْكُرُوٓا۟ إِذْ أَنتُمْ قَلِيلٌۭ مُّسْتَضْعَفُونَ فِى ٱلْأَرْضِ تَخَافُونَ أَن يَتَخَطَّفَكُمُ ٱلنَّاسُ فَـَٔاوَىٰكُمْ وَأَيَّدَكُم بِنَصْرِهِۦ وَرَزَقَكُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَـٰتِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
স্মরণ করো সেই সময়ের কথা যখন তোমরা ছিলে সামান্য কয়েকজন। পৃথিবীর বুকে তোমাদের দুর্বল মনে করা হতো। লোকেরা তোমাদের খতম করেই দেয় নাকি, এ ভয়ে তোমরা কাঁপতে। তারপর আল্লাহ তোমাদের আশ্রয়স্থল যোগাড় করে দিলেন, নিজের সাহায্য দিয়ে তোমাদের শক্তিশালী করলেন এবং তোমাদের ভাল ও পবিত্র জীবিকা দান করলেন, হয়তো তোমরা শোকরগুজার হবে। ২১
২১
এখানে শোকরগুজার শব্দটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ওপরের ধারাবাহিক বক্তব্যগুলো সামনে রাখলে একটা কথা পরিষ্কার হয়ে যায়। আল্লাহ মুসলমানদের দুর্বলতার অবস্থা থেকে বের করে এনেছেন এবং মক্কার বিপদসংকুল জীবন থেকে উদ্ধার করে তাদেরকে এমন শান্তি ও নিরাপত্তার ভূমিতে আশ্রয় দিয়েছিলেন, যেখানে তারা উত্তম রিযিক লাভ করছে। শুধুমাত্র এতটুকু কথা মেনে নেয়াই শোকরগুজারী অর্থ প্রকাশের জন্য যথেষ্ট নয়। বরং সেই সাথে একথাও অনুধাবন করা শোকরগুজারীর অন্তর্ভুক্ত যে, যে মহান আল্লাহ মুসলমানদের প্রতি এত সব অনুগ্রহ করেছেন সেই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করা তাদের কর্তব্য। আর রসূল যে আন্দোলনের সূচনা করেছেন, তাকে সফল করার সাধনায় তাদেরকে আন্তরিকতা ও উৎসর্গিত মনোভাব নিয়ে আত্মনিয়োগ করতে হবে। এ কাজে যেসব বাধা-বিপত্তি, বিপদ-আপদ ও ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দেবে, আল্লাহর ওপর নির্ভর করে তারা সাহসের সাথে তার মোকাবিলা করে যাবে। কারণ এ আল্লাহই ইতিপূর্বে বিপদ-আপদ থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে এনেছিলেন। তারা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস-রাখবে, যখন তারা আন্তরিকতা সহকারে আল্লাহর কাজ করবে, তখন আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদের পক্ষ সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা করবেন-এসবই শোকরগুজারীর অর্থে অন্তর্ভুক্ত। কাজেই শুধুমাত্র মুখে স্বীকৃতি দান পর্যায়ের শোকরগুজারী এখানে উদ্দেশ্য নয়। বরং এ শোকরগুজারী বাস্তবে কাজের মাধ্যমে প্রকাশিত হবে। অনুগ্রহের কথা স্বীকার করা সত্ত্বেও অনুগ্রহকারীর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রচেষ্টা না চালানো, তার খিদমত করার ব্যাপারে আন্তরিক না হওয়া এবং না জানি আগামীতেও তিনি অনুগ্রহ করবেন কিনা এ ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করা-এসব কোন ক্রমেই শোকরগুজারী নয় বরং উল্টো অকৃতজ্ঞতারই আলামত।