আয়াত
১ ) ধ্বংস তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়। ১
وَيْلٌ لِّلْمُطَفِّفِينَ ١
২ ) তাদের অবস্থা এই যে, লোকদের থেকে নেবার সময় পুরোমাত্রায় নেয়
ٱلَّذِينَ إِذَا ٱكْتَالُوا۟ عَلَى ٱلنَّاسِ يَسْتَوْفُونَ ٢
৩ ) এবং তাদেরকে ওজন করে বা মেপে দেবার সময় কম করে দেয়। ২
وَإِذَا كَالُوهُمْ أَو وَّزَنُوهُمْ يُخْسِرُونَ ٣
৪ ) এরা কি চিন্তা করে না, একটি মহাদিবসে ৩
أَلَا يَظُنُّ أُو۟لَٰٓئِكَ أَنَّهُم مَّبْعُوثُونَ ٤
৫ ) এদেরকে উঠিয়ে আনা হবে?
لِيَوْمٍ عَظِيمٍ ٥
৬ ) যেদিন সমস্ত মানুষ রব্বুল আলামীনের সামনে দাঁড়াবে।
يَوْمَ يَقُومُ ٱلنَّاسُ لِرَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ ٦
৭ ) কখ্খনো নয়, ৪ নিশ্চিতভাবেই পাপীদের আমলনামা কয়েদখানার দফতরে রয়েছে। ৫
كَلَّآ إِنَّ كِتَٰبَ ٱلْفُجَّارِ لَفِى سِجِّينٍ ٧
৮ ) আর তুমি কি জানো সেই কয়েদখানার দফতরটা কি?
وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا سِجِّينٌ ٨
৯ ) একটি লিখিত কিতাব।
كِتَٰبٌ مَّرْقُومٌ ٩
১০ ) সেদিন মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য ধ্বংস সুনিশ্চিত,
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِينَ ١٠
১.
মূলে مُطَفِّفِيْنَ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এ শব্দটি এসেছে تَطْفِيْفِ থেকে। আরবী ভাষার তাফীফ طَفِيْف ছোট্ট, তুচ্ছ ও নগণ্য জিনিসকে বলা হয়ে থাকে। পারিভাষিক অর্থে তাফীফ মানে হচ্ছে মাপে ও ওজনে চুরি করা। কারণ এ কাজ করার সময় এক ব্যক্তি মাপ ও ওজনের মাধ্যমে কোন বড় পরিমাণ জিনিস চুরি করে না। বরং হাত সাফাইয়ের মাধ্যমে প্রত্যেক ক্রেতার অংশ থেকে সামান্য সামান্য করে বাঁচিয়ে নেয়। ফলে বিক্রেতা কি জিনিস কতটুকু চুরি করেছে ক্রেতা তা টেরও পায় না।
২.
কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে ওজনে ও মাপে কম করার কঠোর নিন্দা এবং সঠিকভাবে ওজন ও পরিমাণ করার জন্য কড়া তাগিদ করা হয়েছে। সূরা আন’আমে বলা হয়েছেঃ “ইনসাফ সহকারে পুরো ওজন ও পরিমাপ করো। আমি কাউকে তার সামর্থ্যের চাইতে বেশীর জন্য দায়িত্বশীল করি না।” (১৫২ আয়াত) সূরা বনী ইসরাঈলে বলা হয়েছেঃ “মাপার সময় পুরো মাপবে এবং সঠিক পাল্লা দিয়ে ওজন করবে।” (৩৫ আয়াত) সূরা রহমানে তাগিদ করা হয়েছেঃ “ওজনে বাড়াবাড়ি করো না, ঠিকভাবে ইনসাফের সাথে ওজন করো এবং পাল্লায় কম করে দিয়ো না। (৮-৯আয়াত) শো’আইবের সম্প্রদায়ের ওপর এ অপরাধের কারণে আযাব নাযিল হয় যে, তাদের মধ্যে ওজনে ও মাপে কম দেবার রোগ সাধারণভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং হযরত শো’আইব (আ) --এর বারবার নসীহত করা সত্ত্বেও এ সম্প্রদায়টি এ অপরাধমূলক কাজটি থেকে বিরত থাকেনি।
৩.
কিয়ামতের দিনটিকে মহাদিবস হিসেবে উপস্থাপিত করে বলা হয়েছেঃ সেদিন আল্লাহর আদালতে সকল জিন ও মানুষের কাজের হিসেব নেয়া হবে একই সঙ্গে এবং আযাব ও সওয়াব দানের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ফায়সালা করা হবে।
৪.
অর্থাৎ দুনিয়ায় এ ধরনের অপরাধ করার পর তারা এমনি স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াবে এবং কখনো এদের আল্লাহর সামনে জবাবদিহি করার জন্য হাযির হতে হবে না, তাদের এ ধারণা একেবারে ভুল।
৫.
আসলে সিজ্জীন سِجِّيْنُ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এ শব্দটি এসেছে সিজন
سِجْن থেকে। সিজন মানে জেলখানা বা কয়েদখানা। সামনের দিকে যে ব্যাখ্যা করা হয়েছে তা থেকে জানা যায়, এর অর্থ হচ্ছে এমন ধরনের রেজিষ্টার খাতা যাকে শাস্তিলাভ যোগ্য লোকদের আমলনামা লেখা হচ্ছে।