একঃ মুসলমান ও কাফেররা যেভাবে পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল তাতে উভয় দলের নৈতিক ও চারিত্রিক পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। একদিকে কাফেরদের সেনাবাহিনীতে মদপানের হিড়িক চলছিল। তাদের গায়িকা ও নর্তকী বাঁদীরা সঙ্গে এসেছিল। ফলে সেনা শিবিরের ভোগের পেয়ালা উপচে পড়ছিল। অন্যদিকে মুসলমানদের সেনাদলে আল্লাহভীতি ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের স্নিগ্ধ পরিবেশ বিরাজমান ছিল। তাদের মধ্যে ছিল চরম নৈতিক সংযম। সৈন্যরা নামায-রোযায় মশগুল ছিল। কথায় কথায় আল্লাহর নাম উচ্চারিত হচ্ছিল এবং আল্লাহর কাছে দোয়া ও করুণা ভিক্ষা মহড়া চলছিল। দু’টি সৈন্য দল দেখে যেকোন ব্যক্তি অতি সহজেই জানতে পারতো, কোন্ দলটি আল্লাহর পথে লড়াই করছে।
দুইঃ মুসলমানরা তাদের সংখ্যাল্পতা ও সমরাস্ত্রের অভাব সত্ত্বেও যেভাবে কাফেরদের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ ও উন্নত অস্ত্রসজ্জায় সেনাদলের ওপর বিজয় লাভ করলো তাতে একথা সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল যে, তারা আল্লাহর সাহায্যপুষ্ট ছিল।
তিনঃ আল্লাহর প্রবল প্রতাপান্বিত ক্ষমতা সম্পর্কে গাফেল হয়ে যারা নিজেদের সাজ-সরঞ্জাম ও সমর্থকদের সংখ্যাধিক্যের কারণে আত্মম্ভরিকতায় মেতে উঠেছিল, তাদের জন্য এ ঘটনাটি ছিল যথার্থই একটি চাবুকের আঘাত। আল্লাহ কিভাবে মাত্র গুটিকয় বিত্তহীন, অভাবী ও প্রবাসী মুহাজির এবং মদীনার কৃষক সমাজের মুষ্টিমেয় জনগোষ্ঠীর সহায়তায় কুরাইশদের মতো অভিজাত শক্তিশালী ও সমগ্র আরবীয় সমাজের মধ্যমণি গোত্রকে পরাজিত করতে পারেন, তা তারা স্বচক্ষেই দেখে নিল।